২৭ জানুয়ারী ২০২৫, সোমবার, ১১:০৪:৫৭ অপরাহ্ন
রাবি ক্যাম্পাসে বহিরাগত শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় দফায় দফায় বিক্ষোভ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০১-২০২৫
রাবি ক্যাম্পাসে বহিরাগত শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় দফায় দফায় বিক্ষোভ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে একজন কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় অধিবাসী ও শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুরে রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর ব্যানারে বিক্ষোভ করা হয়।


অন্যদিকে একই দাবিতে শনিবার বেলা ১১টায় রাজশাহী কলেজে এবং তালাইমারী মোড়ে অবরোধ করে পৃথক বিক্ষোভ করা হয়। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার রাতে নগরীর বিনোদপুরে সড়ক অবরোধের সময় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভের সময় দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায়। প্রায় ঘণ্টা ব্যাপী বিক্ষোভের পর আন্দোলনকারীরা শনিবার বেলা ১১টায় নগরীর তালাইমারি মোড়ে পুনরায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে চলে যান। এদিকে শনিবার বেলা ১১টায় রাজশাহী কলেজে এবং নগরীর তালাইমারী মোড়ে পৃথক বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। 


জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১০টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের পূর্বপাশে বান্ধবীকে নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন ভুক্তভোগী রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী শিমুল ইসলাম সজিব। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডির টহল সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হলে শিমুল মোটরসাইকেলে বান্ধবীকে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় পথচারী শিক্ষার্থীরা ছিনতাইকারী ভেবে ধরধর করলে শিমুল আরও দ্রুত মোটরসাইকেল চালায়। একপর্যায়ে নির্মাণাধীন সড়কে বিছানো রডের সাথে ধাক্কা খেয়ে মোটরসাইকেল থেকে শিমুল ইসলাম ও তার বান্ধবী পড়ে যান। এসময় শিমুল ইসলাম মাথায় ও তার বান্ধবী পায়ে আঘাত পান। এসময় প্রক্টরিয়াল বডির সহযোগিতায় শিমুলকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 


তবে শিমুল ইসলামের স্বজনদের অভিযোগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিমুলের মৃত্যুকে নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে অভিহিত করছেন। তারা দাবি করেন, ঘটনাটি দুর্ঘটনা নাকি শিমুল কারও দ্বারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে প্রক্টোরিয়াল বডির সংশ্লিষ্ট সদস্যদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন নিহত শিক্ষার্থীর স্বজনেরা।


এদিকে শিমুলের মৃত্যুর ঘটনায় উপ-উপাচার্য প্রফেসর মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর আখতার হোসেন মজুমদার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান।


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে। পাশাপাশি অনুমাননির্ভর বা ভিত্তিহীন তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়। 


বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, এবং উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর ফরিদ উদ্দীন খান শিমুলের অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তারা শিমুলের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।


নগরীর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মালেক জানান, শিমুলের মৃত্যুর ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। শিমুলের সঙ্গের বান্ধবীকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে।


শেয়ার করুন