ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে মধ্যরাতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নীলক্ষেত ও নিউমার্কেট এলাকা। দফায় দফায় দুই পক্ষের পালটাপালটি ধাওয়ায় অন্তত সাতজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের সহায়তায় ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাত ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের (শিক্ষা) বাসভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়ে সায়েন্সল্যাব মোড় থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা কলেজে প্রবেশ করেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের ফোকাল পারসন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম অনুযায়ী ঢাবির উপ-উপাচার্য শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাননি। আমরা সব শিক্ষার্থী মিলে উপ-উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করতে যাব।
কোন কারণে ঢাবি ও সাত কলেজ সংঘর্ষ
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, রোববার বিকালে ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিলসহ পাঁচ দফা দাবির অগ্রগতি জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদের সঙ্গে কথা বলতে যান সাত কলেজের এক দল শিক্ষার্থী। এ সময় কয়েকজন হুড়মুড় করে তার কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন। এতে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন অধ্যাপক মামুন।
এ সময়ের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া যায়। এতে দেখা যায়, মামুন আহমেদ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলছেন, ‘আমি তোমাদের বলেছি দুইজন আসতে; কেন বলেছি? আমি তোমাদের কথা শুনব। বাট তুমি দলবল নিয়ে আমার রুমে ঢুকেছ।’
অন্যপাশে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘দুইজন তো সব কথা বলতে পারবে না।’ তখন অধ্যাপক মামুন বলেন, ‘কেন বলতে পারবে না? তোমার বক্তব্য প্রতিনিধি হিসেবে বলবা।’ শিক্ষার্থী বলেন, ‘ওরা মানবে না স্যার।’ তখন অধ্যাপক মামুন বলেন, ‘মানবে না, দ্যাটস নট মাই বিজনেস।’ তখন এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আপনি এত অ্যাগ্রেসিভ হয়ে যাচ্ছেন কেন?’ তখন অধ্যাপক মামুন বলেন, ‘অ্যাগ্রেসিভ হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।’ তখন ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আপনি যেভাবে অ্যাগ্রেসিভ হয়ে গেলেন, এটা কিন্তু গ্রহণযোগ্য আচরণ নয়।’ তখন অধ্যাপক মামুন বলেন, ‘অবশ্যই এটা গ্রহণযোগ্য আচরণ। প্লিজ সরি, তোমার কথা শুনব না। তোমার কথা বারবার শোনার জন্য এখানে বসিনি।’
অধ্যাপক মামুনের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ হন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদে তারা সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকা কলেজের সামনে জড়ো হন। পরে অশোভন আচরণের অভিযোগ তুলে অধ্যাপক মামুনকে প্রকাশ্যে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে তারা সায়েন্স ল্যাব, টেকনিক্যাল মোড় ও তাঁতীবাজার সড়ক অবরোধ করেন। এতে সায়েন্স ল্যাব, নীলক্ষেত মোড়, এলিফ্যান্ট রোড, পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।