৩১ জানুয়ারী ২০২৫, শুক্রবার, ০২:৫৪:১৪ পূর্বাহ্ন
ওয়াশিংটনে যাত্রীবাহী বিমান-হেলিকপ্টার সংঘর্ষ, ১৯ লাশ উদ্ধার
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০১-২০২৫
ওয়াশিংটনে যাত্রীবাহী বিমান-হেলিকপ্টার সংঘর্ষ, ১৯ লাশ উদ্ধার

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে একটি যাত্রীবাহী বিমান ও একটি সামরিক হেলিকপ্টারের মধ্যে মাঝ আকাশে সংঘর্ষের ঘটনায় পার্শ্ববর্তী নদী থেকে অন্তত ১৯টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। 


এ দুর্ঘটনাটি স্থানীয় সময় বুধবার রাতে ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউস থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে ঘটে। এ সময় যাত্রীবাহী ওই বিমানে ৪ জন ক্রুসহ ৬৪ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানা গেছে। 


দুর্ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া দৃশ্যগুলোতে দেখা গেছে, দুর্ঘটনার ফলে বিশাল আতশবাজির মতো আকাশ আলোকিত হয়ে উঠেছিল। এরপরই বিমান ও হেলিকপ্টারটি পার্শ্ববর্তী পোটোম্যাক নদীতে পতিত হয়।


সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, আমেরিকান ঈগলের ৫৩৪২ নম্বর ফ্লাইটটি ক্যানসাস থেকে ওয়াশিংটন ডিসি যাচ্ছিল। এ সময় তাতে ৬০ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রু ছিলেন। 


মার্কিন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিমানের যাত্রীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মার্কিন ফিগার স্কেটিং সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন। অন্যদিকে দুর্ঘটনা কবলিত ব্ল্যাকহক হেলিকপ্টারটি ছিল একটি প্রশিক্ষণ হেলিকপ্টার। এতে তখন ৩ জন সেনা সদস্য ছিলেন। তবে কোনো শীর্ষ কর্মকর্তা ছিলেন না।


মার্কিন ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (FAA) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে বিমানটি রোনাল্ড রিগ্যান ন্যাশনাল এয়ারপোর্টে অবতরণের সময় সিকোরোস্কি ইউএইচ-৬০ ব্ল্যাকহক হেলিকপ্টারটির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।


আমেরিকান এয়ারলাইনস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমাদের উদ্বেগ এখন যাত্রী ও ক্রুদের নিয়ে। আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং জরুরি উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করছি’।


দুর্ঘটনার পরপরই FAA তাদের সমস্ত ফ্লাইট স্থগিত করে দেয় এবং ঘটনাস্থলে জরুরি পরিষেবা ইউনিট পৌঁছে যায়।


এদিকে পোটোম্যাক নদীতে উদ্ধার অভিযান চলছে। এতে ফায়ারবোট, ডুবুরি দল ও অগ্নিনির্বাপণ বাহিনী অংশ নিয়েছে। গভীর রাতের অন্ধকারের কারণে উদ্ধারকারীরা বেশ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন।


স্থানীয় মিডিয়া সূত্রে জানা গেছে, ডুবুরিরা এখনো নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছেন এবং কঠিন জলবায়ুর কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে।


এদিকে এই দুর্ঘটনাকে ‘ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এই দুর্ঘটনা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত বলেও জানিয়েছেন। 


সেই সঙ্গে ট্রাম্প প্রশ্ন তুলে বলেছেন, নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার কেন হেলিকপ্টারকে উপযুক্ত নির্দেশ দেয়নি? এটা এমন একটি ঘটনা, যা প্রতিরোধ করা যেত। 


তিনি তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল-এই প্রশ্ন তুলেছেন।


এদিকে আমেরিকান এয়ারলাইনসের সিইও রবার্ট আইসম্যান এক ভিডিও বার্তায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, ‘যাত্রী ও তাদের পরিবারের পাশে থাকার জন্য আমাদের জরুরি পরিষেবা ইউনিট সক্রিয়’।


পাশাপাশি তারা একটি জরুরি যোগাযোগ নম্বর (৮০০-৬৭৯-৮২১৫) প্রকাশ করেছে। যাতে উদ্বিগ্ন আত্মীয়-স্বজনরা জরুরি খোঁজখবর নিতে পারেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের মানুষের জন্য news.aa.com ওয়েবসাইটে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে।


এদিকে মার্কিন ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (NTSB) এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। সূত্র: এনডিটিভি


শেয়ার করুন