১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, মঙ্গলবার, ০৬:৫২:৫৭ অপরাহ্ন
নির্বাচনের ঢেউ তুলতে নতুন কৌশলে বিএনপি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০২-২০২৫
নির্বাচনের ঢেউ তুলতে নতুন কৌশলে বিএনপি

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ও দ্রুত নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণাসহ নানা দাবিতে সারা দেশে সমাবেশ করতে যাচ্ছে


বিএনপি।  সারা দেশে জাতীয় নির্বাচনের ঢেউ তুলতে চায় দলটি। এর মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে জনদাবির ব্যানারে এই প্রথমবারের মতো মাঠ পর্যায়ে কর্মসূচিতে নামছে। এসব সমাবেশে মূলত প্রধান ফোকাস থাকবে কেন দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দরকার, সেসব যুক্তি ও বাস্তবতা তুলে ধরা। এছাড়া ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও চলমান পরিস্থিতিতে জনগণকে সতর্ক থাকতে দিকনির্দেশনামূলক বার্তাও দেওয়া হবে। প্রথম ধাপে ৬৭ সাংগঠনিক জেলায় সমাবেশ হবে। কাল একযোগে নয় জেলায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে ধারাবাহিক এ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।


সমাবেশে যোগ দিতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও যুগ্ম মহাসচিব পদমর্যাদার সিনিয়র নেতারা তৃণমূলে যাচ্ছেন। কর্মসূচি সফল করতে বিভাগীয় সাংগঠনিক, সহসাংগঠনিক এবং সংশ্লিষ্ট জেলার কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী সারা দেশে দলীয় নেতাকর্মীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। জেলার পর দ্বিতীয় ধাপে পর্যায়ক্রমে মহানগর ও বিভাগীয় সদরে সমাবেশ করবে। শেষ সমাবেশটি হতে পারে ঢাকা মহানগরে। রমজানের আগেই এ কর্মসূচি শেষ করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।


বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যুগান্তরকে বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা ও রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবিলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে ১২ ফেব্রুয়ারি (কাল) থেকে সমাবেশ শুরু হবে। শেষ হবে ২৫ ফেব্রুয়ারি এ কর্মসূচি। ৬৭ সাংগঠনিক জেলায় সমাবেশের পর পর্যায়ক্রমে মহানগর ও বিভাগীয় সদরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।’


বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল যুগান্তরকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে জনগণ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। জনগণ আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকে তাকিয়ে আছেন-দেশের এই পরিস্থিতিতে আমাদের দল কী ভূমিকা রাখে। তাই সময়ের প্রেক্ষাপটে আমরা মনে করছি, দেশের বর্তমান অবস্থায় দলের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কিছু বার্তা জনগণকে দেওয়া দরকার। এই বার্তা দেওয়ার জন্য সারা দেশে বিএনপির সব সাংগঠনিক জেলা-মহানগরে সমাবেশ করব। জনগণকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরব এবং দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানাব। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের যে আগামীর উন্নয়নশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার উদ্দেশ্য নিয়ে বিগত দিনে এই দল এত ত্যাগ শিকার করে আসছে। এত অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে এ পর্যন্ত এসেছে। এর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থেকে এই আন্দোলনের সঙ্গে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে চাই। এসব সমাবেশ সফল করতে ঢাকা বিভাগের জেলাসহ তৃণমূল পর্যন্ত প্রস্তুতি সভাসহ যা যা করা দরকার তা করছি।’


চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের দাবি করে আসছে বিএনপি। দলটি মনে করে, জুলাই-আগস্টেই নির্বাচন করা সম্ভব। জানা গেছে, চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় কেন জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন তা সমাবেশে তুলে ধরবেন সিনিয়র নেতারা। একই সঙ্গে সম্ভাব্য প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের উদ্দেশেও ভোটারদের আস্থায় রাখতে দেওয়া হবে নানা বার্তা। এক্ষেত্রে আগামী নির্বাচন ও দেশ নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরার কথা রয়েছে।


জনগণ যাতে বিএনপির ওপর আস্থা ধরে রাখে সেজন্য এখন থেকেই নানা কর্মকাণ্ড শুরু করার আহ্বানও থাকবে। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেবে না বিএনপি-এ কথা জানিয়ে চলমান পরিস্থিতিতে কোনো পক্ষ যেন সুযোগ নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকার জন্য বার্তা দেওয়া হবে। কোনো নেতাকর্মী, সে যত বড় প্রভাবশালীই হোক না কেন, অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হলে জানামাত্রই বহিষ্কার করা হবে-দলীয় এমন সিদ্ধান্তের কথাও সমাবেশে তুলে ধরবে সিনিয়র নেতারা। এছাড়া বিএনপির বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে একটি গোষ্ঠী অপপ্রচার চালাচ্ছে-এমন অভিযোগ করে সে বিষয়ে সজাগ থেকে যথাযথ জায়গা থেকে জবাব দিতেও আহ্বান থাকবে।


শেয়ার করুন