০৬ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:৫৬:২৯ অপরাহ্ন
১৫ লাখ হাজির অংশগ্রহণে মিনায় পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৬-২০২৫
১৫ লাখ হাজির অংশগ্রহণে মিনায় পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে এবারের পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। হিজরি ১৪৪৬ সনের হজ উপলক্ষে মিনায় সমবেত হয়েছেন প্রায় ১৫ লাখ হজযাত্রী। ইহরাম পরিহিত হাজিদের ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে মিনা উপত্যকা।


হজযাত্রীরা বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ৯ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত মিনায় অবস্থান করবেন। এরপর সন্ধ্যায় তারা রওনা হবেন মুজদালিফার পথে, যেখানে রাত যাপন শেষে শয়তানকে পাথর মারার জন্য পাথর সংগ্রহ করা হবে।


হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ‘ওকুফে আরাফা’র প্রস্তুতি নিচ্ছেন হাজিরা। মিনায় রাত কাটানোর মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় এবং এর পরদিন ভোর থেকে আরাফার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন তারা। আরাফার ময়দান, যেটি মিনা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে, সেখানে হাজিরা সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন। পরে তারা প্রায় ৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মুজদালিফায় যাবেন।


আরাফায় অবস্থানকালে মুসল্লিরা মসজিদে নামিরা থেকে দেওয়া হজের খুতবা শুনবেন এবং জোহর ও আসরের নামাজ একত্রে আদায় করবেন।


সৌদি আরবের হজমন্ত্রী তৌফিক রাবিয়া জানিয়েছেন, এ বছর হজে অংশ নিতে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন প্রায় ১৫ লাখ বিদেশি হজযাত্রী। তাপপ্রবাহ ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সৌদি কর্তৃপক্ষ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।

 


হজ উপলক্ষে নিয়োজিত হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি কর্মী। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৪০টিরও বেশি সংস্থা যৌথভাবে কাজ করছে। গরম থেকে বাঁচাতে ৫০ হাজার বর্গমিটার অতিরিক্ত ছায়াযুক্ত স্থান, ৪০০টির বেশি শীতলীকরণ ইউনিট এবং হাজারো চিকিৎসা কর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে।


বার্তা সংস্থা আনাদোলুর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর হজে অংশ নিয়েছিলেন ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ১৬৪ জন। এদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ হজযাত্রী ছিলেন ২ লাখ ২১ হাজার ৮৫৪ জন। বিশ্বের ২০০টিরও বেশি দেশের মানুষ অংশ নিয়েছিলেন ঐ হজে।


এবারের হজে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। ১২ বছরের নিচের শিশুদের হজে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পাশাপাশি অনুমতিপত্র ছাড়া হজে অংশ নিলে ৫ হাজার ডলার জরিমানা এবং ১০ বছরের জন্য সৌদি আরব প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে।


হজমন্ত্রী জানান, গত বছর মৃত্যুবরণকারীদের ৮০ শতাংশই ছিলেন নিবন্ধনবিহীন হজযাত্রী। তাপমাত্রা ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছালে তারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আবাসন ও পরিবহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। মৃতদের মধ্যে শত শত মিশরীয় ও ইন্দোনেশীয়ও ছিলেন।


ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের একটি হজ। প্রতি বছর হিজরি বছরের ১২তম মাসে অনুষ্ঠিত এ ধর্মীয় অনুষ্ঠান প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমদের জন্য জীবনে অন্তত একবার পালন করা ফরজ, যদি তারা শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম হন।


হজের শুরুতে পুরুষ হাজিরা সাদা ইহরাম পরে থাকেন, আর নারীরা শালীন পোশাকে মাথা ঢেকে অংশ নেন। এরপর তাওয়াফ, সাঈ এবং মিনায় অবস্থানসহ পুরো হজের রীতিনীতি পালন করেন তারা। আজ বৃহস্পতিবার হজযাত্রীরা আরাফার ময়দানে সমবেত হবেন, যেখানে রাসুলুল্লাহ (সা.) তার বিদায় হজের খুতবা দিয়েছিলেন।


শেয়ার করুন