০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার, ০৪:১৫:০১ অপরাহ্ন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপিকে শুভেচ্ছা জানাল এনসিপি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৯-২০২৫
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপিকে শুভেচ্ছা জানাল এনসিপি

৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির নেতাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। এই দুই দলের নেতারা মনে করেন দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছাড়া গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। রাজনীতির মাঠে তর্ক-বিতর্ক হবে, কিন্তু একে-অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাও দেখাতে হবে।


সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে যান উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের নেতৃত্বে এনসিপির প্রতিনিধি দল।


এসময় তারা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও শুভেচ্ছা জানান। তার সঙ্গে আরো ছিলেন, এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, কেন্দ্রীয় সংগঠক মোস্তাক আহমেদ শিশির, তৌহিদ হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের গুলশান জোনের সংগঠক মাইনুল ইসলাম। শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে ছিলেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘তরুণ বন্ধুগণ যারা জাতীয় নাগরিক পার্টি সৃষ্টি করেছে, তারা আজকে প্রমাণ করলেন, মাঠে আমরা যে যে যেরকমই তর্ক-বিতর্ক, বক্তৃতা দেই না কেন, এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি আমাদের মধ্যে চালু থাকতে হবে। যে আমরা পরস্পর তর্ক করব, বিতর্ক করব, ভিন্ন মত পোষণ করব। কিন্তু সৌহার্দ্যমূলক আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, পারস্পরিক আলোচনা এটা চালু থাকবে। এটাই রাজনৈতিক সংস্কৃতি।


এই বিশাল পরিবর্তন আমাদেরকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। এই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি আমরা চালু করার মধ্য দিয়ে বিগত দিনের অগণতান্ত্রিক অপসংস্কৃতিকে বিলপ্ত করতে পারব। আমরা ভালো রাজনৈতিক আদর্শ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী রাজনীতিকে বিলুপ্ত করতে পারব। 

সুতরাং এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি যেন চর্চা থাকে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যটা যেন আমরা ধরে রাখি।


এটাকে শক্তিতে পরিণত করে ইনশআল্লাহ আমরা আগামী দিনে দেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটাব। গণতান্ত্রিক যাত্রা এভাবে যেতে-যেতে, বহুদিনের প্র্যাকটিসের মধ্য দিয়ে, এমন একটা অবস্থায় আমরা উন্নীত হব, সেই সময় গণতন্ত্রকে আর কেউ ব্যহত করার প্রচেষ্টাই গ্রহণ করতে পারবে না। সফলও হবে না। আমরা সাংবিধানিকভাবে গণতান্ত্রিকভাবে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে চাই, সেটা এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হবে।

তিনি বলেন, আমরা কেয়ারটেকার সরকারের পুনঃপ্রবর্তন, স্বাধীন ইলেকশন কমিশন, স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং স্বাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে সেটা রক্ষা করতে পারব। এগুলোই হবে গণতন্ত্রের রক্ষাকবজ। আমাদের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জয় হোক। আমরা যেন এই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে চালু রাখতে পারি, চর্চা করতে পারি। সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি দেশবাসীর প্রতি আমাদের সেই উদাত্ত আহ্বান থাকবে।


অন্যদিকে সারজিস আলম বলেন, আমরা বিএনপির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করি। আমরা বিশ্বাস করি, তারা জাতীয়তাবাদকে ধারণ করে তারা আগামীর বাংলাদেশে ও দেশের জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সর্বাগ্রে কাজ করে যাবেন। বিগত সময়ে শেখ হাসিনা শুধু গণতন্ত্রকেই নষ্ট করেনি, গণতান্ত্রিক যে সংস্কৃতি, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে সৌহার্দ্য সম্পর্ক হতে পারে, এসব কিছুকে তিনি শেষ করে দিয়ে গেছে। আমাদের আগামীর বাংলাদেশে অন্যতম অগ্রহতি হওয়া উচিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক।


তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি আমার দ্বিমত থাকতে পারে, পক্ষে-বিপক্ষে কঠোর সমালোচনা থাকতে পারে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছাড়া আগামীর বাংলাদেশে যে গণতন্ত্রের উত্তরণের কথা বলি, সংস্কারের মধ্যে দিয়ে যে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশের কথা বলি, সেটি সম্ভব নয়। সেই উদ্যোগ শুধু কথায় নয়, কাজে আমাদেরই নিতে হবে। এজন্য আমরা বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছি। আমদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার পারস্পারিক সম্পর্ক, ২৪ এর গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমরা একসঙ্গে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশের সামনের দিকে যে যাত্রা সেই যাত্রায় সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে এগিয়ে যাব।


শেয়ার করুন