বঙ্গোপসাগরে মাঝারি পাল্লার সাবমেরিন-লঞ্চড ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (এসএলবিএম) কেএ–৪–এর পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত। দেশটির পরমাণু শক্তিচালিত ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন আইএনএস অরিঘাত থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা হয়।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম উপকূলের কাছে পরীক্ষাটি চালানো হয়। যদিও এ বিষয়ে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে সূত্রের বরাতে টাইমস অব ইন্ডিয়া এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, ক্ষেপণাস্ত্রটি ছিল কেএ–৪, যার পাল্লা প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কিলোমিটার এবং এটি দুই থেকে আড়াই টন ওজনের পারমাণবিক বিস্ফোরক বহনে সক্ষম।
একটি সূত্র জানায়, পরীক্ষাটি নির্ধারিত প্রযুক্তিগত মানদণ্ড ও মিশন উদ্দেশ্য পূরণ করেছে কি না—তা বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করা হবে। বিশেষ করে সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে পূর্ণাঙ্গ অপারেশনাল পর্যায়ে নিতে একাধিক পরীক্ষার প্রয়োজন হয়।
এর আগে ডুবো প্ল্যাটফর্ম হিসেবে সাবমার্সিবল পন্টুন থেকে একাধিক পরীক্ষা চালানোর পর, গত বছরের নভেম্বরে প্রথমবার আইএনএস অরিঘাত থেকে কেএ–৪ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করা হয়।
কেএ–৪ ক্ষেপণাস্ত্রটি ভারতের স্থলভিত্তিক অগ্নি–৩ ক্ষেপণাস্ত্রের নকশা থেকে উদ্ভূত এবং এটি ভারতের অরিহন্ত-শ্রেণির পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণের জন্য বিশেষভাবে পরিবর্তিত। এটি বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘ পাল্লার সমুদ্র থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র।
আইএনএস অরিঘাত ভারতের দ্বিতীয় পারমাণবিক শক্তিচালিত ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন (এসএসবিএন), যা গত বছরের ২৯ আগস্ট নৌবাহিনীতে কমিশন করা হয়। এর আগে ২০১৮ সালে অপারেশনাল হওয়া আইএনএস আরিহন্ত কেবল ৭৫০ কিলোমিটার পাল্লার কেএ–১৫ ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম ছিল।
কেএ–৪ ক্ষেপণাস্ত্রের অপারেশনাল মোতায়েনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে ৫,০০০ থেকে ৬,০০০ কিলোমিটার পাল্লার কেএ–৫ ও কেএ–৬ ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত করার পথ প্রশস্ত হবে, যা ভারতের সমুদ্রভিত্তিক পারমাণবিক সক্ষমতা আরও জোরদার করবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এসএসবিএন প্ল্যাটফর্ম ভারতের পারমাণবিক প্রতিরোধ কৌশলের সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য অংশ, কারণ এগুলো গোপনীয়তা, টিকে থাকার সক্ষমতা এবং নিশ্চিত প্রতিশোধমূলক আঘাতের জন্য সবচেয়ে কার্যকর—যা ভারতের “নো ফার্স্ট ইউজ” নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

