০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার, ১২:৪৪:১০ অপরাহ্ন
সেই অস্ট্রীয় অর্থনীতিবিদের এক্স অ্যাকাউন্ট ভারতে ব্লক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৯-২০২৫
সেই অস্ট্রীয় অর্থনীতিবিদের এক্স অ্যাকাউন্ট ভারতে ব্লক

অস্ট্রিয়ার অর্থনীতিবিদ গুন্টার ফেলিঙ্গারের এক্স অ্যাকাউন্ট ভারতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দেশটির বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণাত্মক মন্তব্যের পর এ সিদ্ধান্ত নিল এক্স কর্তৃপক্ষ।


জানা গেছে, কয়েক দিন আগে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট করেন, যেখানে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ বলে অভিযুক্ত করেন এবং খালিস্তানিদের স্বাধীনতার পক্ষে খোলাখুলি আহ্বান জানান।


তার পোস্টে লেখা ছিল, ভারতকে ভেঙে ফেলার ডাক দিচ্ছি।


নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ার কাছের মানুষ। খালিস্তানিদের স্বাধীনতার জন্য আমাদের বন্ধু প্রয়োজন।

তার এই বক্তব্য ভারতের নজরে আসতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় দ্রুত এক্স কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং আইনি ভিত্তিতে তার অ্যাকাউন্ট দেশটিতে বন্ধের নির্দেশ দেয়। ফলে এখন ভারতে তার এক্স প্রোফাইল খোলার চেষ্টা করলে বার্তা দেখা যাচ্ছে, এই অ্যাকাউন্ট আইনি কারণে ভারতে বন্ধ রয়েছে।


গুন্টার ফেলিঙ্গার অস্ট্রিয়ার সেই কমিটির সভাপতি; যা ইউক্রেন, কসোভো, বসনিয়া এবং অস্ট্রিয়ার ন্যাটো সদস্যপদের জন্য লড়াই করছে। অর্থাৎ তিনি ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় হলেও সরাসরি কোনো সরকারি দায়িত্বে নেই। ফলে নয়াদিল্লি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করেছে, অস্ট্রিয়া সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানানো হবে না। কারণ, তাকে সরকারি পদমর্যাদার প্রতিনিধি হিসেবে দেখা হচ্ছে না।


তবে তার মন্তব্য ভারতের সামাজিক মাধ্যমে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে এবং নীতিনির্ধারক মহলেও এই প্রশ্ন উঠেছে যে বহির্বিশ্ব থেকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে এমন হস্তক্ষেপমূলক বক্তব্যকে কীভাবে দেখা উচিত।

ভারতের সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ স্পষ্ট, জাতীয় নিরাপত্তা ও সামাজিক সম্প্রীতির প্রশ্নে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নিচ্ছে; বিশেষ করে খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদ নিয়ে ভারত অতিমাত্রায় সংবেদনশীল। কারণ, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রবাসী খালিস্তানি সংগঠনগুলোর বিভিন্ন কার্যকলাপ দিল্লিকে একাধিকবার কূটনৈতিক চাপে ফেলেছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে একজন বিদেশি নাগরিকের প্রকাশ্য আহ্বান ভারতের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হিসেবে দেখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইনি কাঠামোর আওতায় সামাজিক মাধ্যমের সঙ্গে সমন্বয় ঘটিয়ে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা ভবিষ্যতে অন্যদের জন্যও বার্তা বহন করছে—ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কোনো উসকানিমূলক প্রচারণা ছড়ালে কঠোর পদক্ষেপ আসবে।


অন্যদিকে সমালোচকদের মতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় মতপ্রকাশ নিয়ন্ত্রণের এই ধারা অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও সরকারের নীতি স্পষ্ট করে। বিরোধীরা বারবার অভিযোগ করে আসছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত করা হচ্ছে। যদিও সরকারি সূত্রগুলো বলছে, বিদেশি নাগরিকের উসকানিমূলক প্রচারাভিযানকে আটকানো কখনোই মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে না, বরং রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মধ্যেই পড়ে। ফলে এ বিষয়ে দিল্লির অবস্থান শক্ত।


শেয়ার করুন