২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০১:৫৮:৩৮ পূর্বাহ্ন
রাবির কেন্দ্রীয় মন্দির সভাপতির বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৮-২০২২
রাবির কেন্দ্রীয় মন্দির সভাপতির বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় মন্দির সভাপতির বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগ উঠেছে। মন্দিরের পবিত্রতা রক্ষার অযুহাত দেখিয়ে নিম্ন বর্ণীয় হিন্দু ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী রাখার অনুমতি না দেওয়ার অভিযোগ করেছে মতুয়া শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড.গোলাম সাব্বির সাত্তার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনটির সভাপতি মোহিত মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক পার্থ রায়।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্ত মন্দির সভাপতি অধ্যাপক কমল কৃষ্ণ বিশ্বাসের কাছে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছু নিম্ন বর্ণীয় হিন্দু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মন্দিরে রাখার বিষয়ে আবেদন জানায় সংগঠনটি। কিন্তু তাদের সাথে অসদাচরণ ও ‘আমি মন্দির পবিত্র রাখতে চাই’ জানিয়ে আবেদনটি নাকচ করে দেন অধ্যাপক কমল। তবে অধ্যাপক কমল তাদের লিখিত আবেদন মঞ্জুর না করলেও বিনা আবেদনে বিশেষ একটি সংগঠনকে মৌখিক অনুমতি দেন এবং সেখানে তাদের অনুসারী ছাত্রদের থাকার ব্যবস্থা করেন যা অত্যন্ত বর্ণবাদী আচরণ বলে দাবি করা হয়।

স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, অধ্যাপক কমল কৃষ্ণ বিশ্বাস তাদের অনুমতি না দেওয়ায় পূর্ববর্তী বছরের ধারাবাহিকতায় বহু শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে তারা বিপদে পড়েছিলো এবারের ভর্তি পরীক্ষায়। এরপর বিভিন্ন জনের আর্থিক সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়ামে প্রায় দুই শত জন দুর্গত শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং অভিভাবককে আবাসন ও আহারের ব্যবস্থা করতে হয় তাদের।

এমন বর্ণবাদী আচরণে অধ্যাপক কমল সভাপতির যোগ্যতা হারিয়েছেন দাবি করে তার অপসারণ চেয়েছেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি মন্দিরের সভাপতি হবেন এমন একজন অধ্যাপক যিনি হিন্দুদের মধ্যকার সকল শ্রেণিকে সমান চোখে দেখবেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক কমল কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, এ ধরনের অভিযোগ সর্বরকম মিথ্যা এবং নোংরা মন-মানসিকতার প্রকাশ। মন্দির সবার জন্য। এখানে সবাই থাকতে পারবে। আমি কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনকে এমন কিছু বলিনি যে তারা থাকতে পারবে না মন্দিরে।

অভিযোগকারীদের মন্দিরে থাকার আবেদন নাকচের বিষয়ে তিনি বলেন, এরকম কোনো লিখিত আবেদন আমি পাইনি। তবে মৌখিকভাবে ও ফোনে কথা বলেছে তাদের কয়েকজন। বিশ্ববিদ্যালয় মন্দির তো অনেক ছোট জায়গা। এখানে সবাইকে রাখাও কঠিন। এই জন্য আমি প্রথমে তাদেরকে অন্য কোথাও রাখার ব্যবস্থা করার জন্য বলেছি। কিন্তু আমি এটাও বলে দিয়েছি যে ব্যবস্থা না করতে পারলে আমরা রাখার ব্যবস্থা করবো। শুধু তারা যেন খাওয়া-ধাওয়া বা মাছ-মাংস মন্দিরে না তুলে। খাবার বাহিরে খাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, মতুয়া শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদ রাবির কেন্দ্রীয় মন্দিরের সহযোগী সংগঠন। হিন্দু সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী এবং বিশেষভাবে নিম্নবর্ণীয় হিন্দু শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে কাজ করার জন্য ২০১৫ সালের ১৫ই মার্চ প্রতিষ্ঠা করা হয় সংগঠনটি।

শেয়ার করুন