বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল হককে নানা বানিয়ে ভুয়া তথ্য দিয়ে পুলিশে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সম্রাট হাসান তুহিনের বিরুদ্ধে। তুহিন সম্পর্কে বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তুহিন নামে আমার কোনো নাতি নেই।’ হলফনামায় থাকা স্বাক্ষর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘স্বাক্ষরটিও আমার নয়, কেউ হয়তো প্রতারণা করেছে।’
এ নিয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর তুহিনের স্ত্রী হোসনা বেগম দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত ময়মনসিংহ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
এদিকে, অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে পুলিশ কনস্টেবল সম্রাট হাসান তুহিন বলেন, ‘স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক ঝগড়া হওয়ার কারণে এমন অভিযোগ করেছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল হক আমার নানা এটাই সত্যি। অফিসিয়ালি নিয়মিত আমাদের ভেরিফিকেশন হয়। মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণা করে থাকলে এত দিতে চাকরি থাকার কথা নয়।’
সম্রাট হাসান তুহিন বর্তমানে রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা থানার শেখেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা। আর নানা পরিচয় দেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মনজুরুল হক নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার শেখুপুর গ্রামের বাসিন্দা। তুহিনের স্ত্রী হোসনা বেগম নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার হিলোচিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
দুদকে দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে তুহিন পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগদানের সময় মোহনগঞ্জ উপজেলার মঞ্জুরুল হককে (মুক্তিযোদ্ধা সনদ নং- ম ৬২১৮৬) তার নানা হিসেবে পরিচয় দিয়ে সুনামগঞ্জ নোটারী পাবলিকে হলফনামা তৈরি করেন। ওই হলফনামার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার কোটার সুবিধা গ্রহণ করে চাকরি পান।
অভিযোগকারীর দাবি, মুক্তিযোদ্ধার কোটায় চাকরির সুবাদে তিনি বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে বেপরোয়া জীবন-যাপন করতেন। এমনকি ছুটি না নিয়েও তিনি মাসের পর মাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতেন। এছাড়া স্থানীয় রাজনৈতিক বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সরাসরি জড়িতও ছিলেন।
নেত্রকোণা পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল সম্রাট হাসান তুহিন (বিপি ৯৪১৪১৭১২০৯) জেলার মদন থানায় কর্মরত থাকাকালীন ২০২৩ সালের ৫ জুলাই হতে ১৫৬ দিন কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত ছিলেন।
ময়মনসিংহ দুদক সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক তাজুল ইসলাম জানান, অভিযোগটি ঢাকা অফিসে পাঠানো হবে। প্রয়োজনীয় নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।