বাংলাদেশের এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি যাচাইয়ে জাতিসংঘ একটি স্বাধীন মূল্যায়ন পরিচালনা করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল রাবাব ফাতিমা। দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আনুষ্ঠানিক অনুরোধের প্রেক্ষিতে এ ঘোষণা দেন তিনি।
রাবাব ফাতিমা একই সঙ্গে এলডিসি, স্থলবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ এবং ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র বিষয়ক জাতিসংঘের উচ্চ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সোমবার নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই কথা জানান।
তিনি জানান, আগামী এক মাসের মধ্যে এ মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু হয়ে জানুয়ারির মধ্যভাগে সম্পন্ন হবে। আন্তর্জাতিক এক পরামর্শক এবং একজন বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ যৌথভাবে এ কাজ সম্পাদন করবেন, যাতে একটি পূর্ণাঙ্গ ও ভারসাম্যপূর্ণ মূল্যায়ন পাওয়া যায়।
মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় সরকারের কর্মকর্তারা, ব্যবসায়ী সংগঠন, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজ, দাতা সংস্থা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে ব্যাপক পরামর্শ করা হবে। এর মাধ্যমে যাচাই করা হবে, বাংলাদেশ আসলেই উত্তরণের জন্য যথাযথভাবে প্রস্তুত কি না।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘উত্তরণ এখন একটি আবেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সঠিক প্রমাণভিত্তিক তথ্য প্রয়োজন।’
রাবাব ফাতিমা উল্লেখ করে বলেন, ‘জাতিসংঘের কাছে বাংলাদেশের সর্বশেষ অর্থনৈতিক তথ্য দুই বছরেরও বেশি পুরনো। এই সময়ে অনেক কিছুই বদলে গেছে।
তাই বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতা পুনর্মূল্যায়ন জরুরি।’
ড. ইউনূস বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এলডিসি মর্যাদার কারণে এ খাত বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা পেয়ে আসছে। যথাযথ প্রস্তুতি ছাড়া উত্তরণ হলে এ শিল্প ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।’
২০২২ সাল থেকে জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পদমর্যাদার এই কর্মকর্তা ফাতিমা তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
বৈঠকে ড. ইউনূস জানতে চান, কীভাবে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তারা জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থায় কাজের সুযোগ পেতে পারে এবং দেশের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সম্পৃক্ততা আরো জোরদার করা যায়।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী।