লাতিন আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো ইসরায়েলের পুরো কূটনৈতিক প্রতিনিধি দলকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় থাকা দুই কলম্বিয়ান নাগরিককে ইসরায়েলি বাহিনী আটক করার পর তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- মানুয়েলা বেদোয়া ও লুনা বারেতো। তারা ছিলেন ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র ক্রু।
গ্লোবাল মুভমেন্ট টু গাজার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফ্লোটিলা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পৌঁছানোর পর ইসরায়েলি সেনারা বেআইনিভাবে ওই দুই নারীকে আটক করে। ঘটনাটি ঘটে উপকূল থেকে ১৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গাজা উপকূল থেকে ‘১৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে পৌঁছানোর পর স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৫৯টা মিনিটে ইসরায়েলি জাহাজগুলোর অবস্থান ধরা পড়ে।’
এতে আরও বলা হয়, আগের ফ্লোটিলাগুলোও ‘আক্রমণ বা আটকের’ শিকার হয়েছে। এটিকে আন্তর্জাতিক আইন ও জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয়।
পেত্রো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে সতর্ক করে বলেন, যদি এ তথ্য সত্যি হয়, তবে এটি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নতুন আন্তর্জাতিক অপরাধ হবে।
তিনি আরও জানান, ইসরায়েলের সঙ্গে করা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হচ্ছে। এর আগে এই সপ্তাহেই তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি স্থগিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
চলতি বছরের মে মাসেই ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন পেত্রো। তবে এবার তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে বাকি থাকা যেকোনো কূটনৈতিক প্রতিনিধিকে দ্রুত কলম্বিয়া ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি জানান, এ ঘটনায় কলম্বিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলা করবে, যার মধ্যে ইসরায়েলি আদালতেও মামলা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইনজীবীদের কলম্বিয়ার আইনজীবী দলকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
এর আগে, গত মাসের শেষ দিকে জাতিসংঘের সাধারণ সম্মেলনে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে রীতিমতো তুলোধুনো করেন।
নিজের বক্তব্যে পেত্রো ইসরায়েলের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি ইসরায়েলিদের ‘নাৎসি’ আখ্যা দিয়ে ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যার অভিযোগ তোলেন।
পেত্রো প্রস্তাব দেন, এশিয়ার দেশগুলোর নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক সামরিক জোট গড়ে তুলে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে হবে। একই সঙ্গে ইসরায়েলে অস্ত্রবাহী জাহাজ পাঠানো বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি।
পেত্রো তার ভাষণে বলেন, ‘ভদ্রমহোদয়গণ, কোনো জাতিই শ্রেষ্ঠ নয়। ঈশ্বরের মনোনীত জাতি বলেও কিছু নেই। সেটা যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল- যে জাতিই হোক না কেন। কেবল অজ্ঞও ডানপন্থী ধর্মান্ধরা এমনটা ভাবতে পারে। আসলে ঈশ্বরের মনোনীত জাতি হলো পুরো মানবজাতি।’