তথ্যচিত্রে তার বক্তৃতা বিভ্রান্তিকরভাবে সম্পাদনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ট্রাম্পের পক্ষে যে মানহানির মামলা করার কথা বলা হয়েছে তা অস্বীকার করেছে তারা। এর আগে এই ঘটনায় ট্রাম্প ১০০ কোটি ডলার ক্ষতি পূরণের মামলা করবেন বলে বিবিসিকে হুমকি দিয়েছিলেন।
বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনার পাশাপাশি সংস্থার চেয়ারম্যান সমির শাহ আলাদাভাবে হোয়াইট হাউজে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছেন, বিবিসি ট্রাম্পের ভাষণ সম্পাদনা নিয়ে আন্তরিকভাবে দুঃখিত। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষণ অনিচ্ছাকৃত সম্পাদনার পর তা সম্প্রচার করা হয়েছে। তার ভাষণের কিছু কিছু অংশ সম্প্রচার করায় ভুল বার্তা গেছে। এর জন্য প্রেসিডেন্ট আমাদের সরাসরি ফোন করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। আমরা এজন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত, তবে মানহানির জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণের শর্ত মানতে আমরা একেবারেই নারাজ।
ঘটনার সূত্রপাত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এক তথ্যচিত্র ঘিরে। তাতে দেখা গেছে, ২০২১ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিলে হামলা হয়। অভিযোগ, উত্তেজিত জনতা হামলা চালিয়েছিল। তবে আঙুল ওঠে সে বছর নির্বাচনে সদ্য পরাজিত তথা সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দিকে। বিবিসির ট্রাম্পকে নিয়ে যে তথ্যচিত্র সম্প্রচার করেছে, তাতে ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় ট্রাম্পকে কার্যত ‘ভিলেন’ প্রতিপন্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সে সময় ট্রাম্পের ভাষণ এমনভাবেই সম্পাদনা করা হয়েছিল যাতে মনে হয়, ঐ হামলায় প্রত্যক্ষ উসকানি ছিল তার। আর এখানেই আপত্তি হোয়াইট হাউজের। বিবিসির ঐ অনুষ্ঠান বিশ্ব জুড়ে সম্প্রচার হতেই প্রবল বিতর্কের মুখে পড়ে বিবিসি।
নিজেদের ঘাড়ে দায় নিয়ে গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেন মহাপরিচালক টিম ডেভি ও খবর সম্প্রচার বিভাগের প্রধান ডেবোনার টারনেস। এরপর ওয়াশিংটনের চাপে পড়ে দফায় দফায় ক্ষমা চাইল বিবিসি। এখন এ ঘটনা সর্বোচ্চ প্রশাসনিক স্তর পর্যন্ত গড়ায় কি না, তা দেখার। কারণ, ইতিমধ্যে ইংল্যান্ডের ডেমোক্র্যাট নেতা প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের কাছে অনুরোধ করেছেন, বিবিসির সম্মান রক্ষার্থে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলুন তিনি। —রয়টার্স ও সিএনএন