যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ডিরেক্ট রিলিফ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ৩৬ কোটি ১০ লাখ টাকা মূল্যমানের অত্যাধুনিক বায়োলজিক ইনজেকশন প্রদান করেছে। বাত-ব্যথা ও বিভিন্ন অটোইমিউন রোগে ব্যবহৃত প্রতিটি ইনজেকশনের বাজারমূল্য প্রায় ৪ লাখ টাকা, তবে রামেক হাসপাতালের রোগীরা এগুলো পাবেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
গত ২৬ নভেম্বর ইনজেকশনগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় পৌঁছায়। কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ২৮ নভেম্বর সকালে সেগুলো রামেকে আনা হয়। ইনজেকশনগুলোর মেয়াদ থাকবে আগামী বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত।
রামেক মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আজিজুল হক ডিরেক্ট রিলিফের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওষুধ আনার উদ্যোগ নেন। পুরো প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদনও দ্রুত পাওয়া যায়।
চিকিৎসকদের মতে, অ্যাডালিমুমাব মূলত রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিস, অ্যাংকাইলোজিং স্পন্ডাইলাইটিস এবং জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থ্রাইটিসসহ নানা অটোইমিউন রোগে ব্যবহৃত হয়। সাধারণ চিকিৎসায় সাড়া না পাওয়া রোগীদের জন্য এটি বিশেষভাবে কার্যকর। একজন রোগীর একাধিক ডোজ প্রয়োজন হতে পারে। বায়োলজিক হওয়ায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও তুলনামূলক কম।
অধ্যাপক আজিজুল হক বলেন, “বাংলাদেশে অ্যাডালিমুমাবের কপি সংস্করণ থাকলেও তার দামও অত্যন্ত বেশি। গরিব মানুষের নাগালে নয়। এখন যেহেতু রোগীরা বিনামূল্যে পাচ্ছেন, অনেকে দীর্ঘদিন ব্যথামুক্ত থাকতে পারবেন।”
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ জানান, অসচ্ছল রোগীদের জন্য এই ইনজেকশন হবে আশীর্বাদ। কোন রোগী ইনজেকশন পাবেন তা নির্ধারণ করবেন মেডিসিন ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক অধ্যাপক আজিজুল হক। মোট ৯০০টি ইনজেকশন বিনামূল্যে প্রয়োগ করা সম্ভব হবে।
এর আগে, গত ২৫ আগস্ট ডিরেক্ট রিলিফ রামেকে প্রায় ১৭ কোটি টাকা মূল্যমানের আড়াই হাজার ভায়াল অ্যাল্টেপ্লেস সরবরাহ করেছিল। স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে রক্ত জমাট ভাঙতে ব্যবহৃত এই ওষুধের ৬০ শতাংশ ইতোমধ্যে ব্যবহার হয়েছে।

