টঙ্গীতে হামিম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সিসিএল-৩ নামে একটি পোশাক কারখানায় একাধিক শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের টঙ্গী হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আতঙ্কে কারখানায় শ্রমিক না থাকায় কর্তৃপক্ষ কারখানাটিতে ছুটি ঘোষণা করেছেন।
আজ রবিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে ১৭ জন অসুস্থ শ্রমিক চিকিৎসার জন্য আসেন।
তারা হলেন— সাইমন, আমেনা, শারমিন, জোনাকী, জুলেখা, বিলকিস, ডালিয়া, রমিজা, নূরজাহান, ফারজানা, রুনাসহ ১৭ জন। শনিবার (২৯ নভেম্বর) এই কারখানায় অর্ধশতাধিক শ্রমিক একই কারণে অসুস্থ হন।
টঙ্গী হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় হামিম গ্রুপের ৪৮ জন শ্রমিক চিকিৎসার জন্য আসেন। এ ছাড়া গাজীপুর, টঙ্গী ও ঢাকাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে অসংখ্য শ্রমিক চিকিৎসাধীন।
জানা যায়, গত ২৪ নভেম্বর মো. আতিকুল ইসলাম (৩০) নামে হামিম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ কালেকশন লিমিটেডের এক শ্রমিক হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে মারা যান। গতকাল শনিবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে আহত শ্রমিকরা জানান, কয়েক দিন আগে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে আমাদের দুজন শ্রমিক মারা যান। এই খবরে অনেকেই অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন।
টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা. ইসরাত জাহান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘হামিম গ্রুপের অসুস্থ শ্রমিকেরা টেনশন থেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসছেন। কর্তৃপক্ষের উচিত কারখানায় মানসিক ডাক্তার দিয়ে শ্রমিকদের কাউন্সেলিং করানো।’
হামিম গ্রুপের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, আতঙ্কে শ্রমিকেরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন, তাই কারখানা দুই দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মোহা. হারুন অর রশিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। মরদেহও আনেননি।
গতকাল সকালে আরেকজন শ্রমিক স্ট্রোক করে মারা যান। এরপর আতঙ্কে অর্ধশতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হন। আজ সকাল ৯টার দিকে আবারও আতঙ্ক দেখা দিলে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে যান। এই অবস্থায় কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেন।’

