২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৩:৩৩:৩৩ অপরাহ্ন
এক কাপ চায়ের দামে ২১ কেজি লেবু!
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৮-২০২২
এক কাপ চায়ের দামে ২১ কেজি লেবু!

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে লেবুর বাজার যেন নিম্নমুখী। হালিতে বিক্রি হওয়া লেবু এখন বিক্রি হচ্ছে কেজির ওজনে। এক কেজি লেবুর খুচরা মূল্য ৫ টাকা। 

গত এক সপ্তাহ ধরে নাটোরের বাগাতিপাড়ার তমালতলাসহ আশপাশের কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

আমদানি বেশি এবং বাজারে ক্রেতা সংকটের কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। 
সোমবার তমালতলা হাটে লেবু বিক্রি করতে এসেছিলেন পার্শ্ববর্তী বেগুনিয়া গ্রামের মকবুল হোসেন। তিনি জানালেন, চলতি মৌসুমে তার বাগানে বেশ লেবু ধরেছে। লেবু উত্তোলন করে আড়তে বিক্রি করতে গিয়েছিলেন। প্রতি কেজি দুই টাকা দাম উঠায় সেখানে বিক্রি করেননি। পরে তমালতলা হাটে প্রতি কেজি ৫ টাকা দরে দুই মণ লেবু ৪০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। প্রতি কেজিতে প্রায় ২০ থেকে ২৫টি লেবু ধরেছে। এতে প্রতি লেবুর দাম পড়েছে মাত্র ২০ পয়সা থেকে ২৫ পয়সা। 

সবজি ব্যবসায়ী কামাল জানান, বাজারে চাহিদার তুলনায় লেবুর সরবরাহ বেশি। সে কারণে দাম পড়ে গেছে। মাস দেড়েক আগেও তিনি প্রতি হালি লেবু বিক্রি করেছেন ১০ থেকে ২০ টাকা দরে। কিন্তু বর্তমানে ৫ টাকা কেজি দরে লেবু বিক্রি করছেন। 

নাটোরের এক ক্রেতা মোতালেব ইসলাম জানান, দাম কম হওয়ায় তিনি ৫ টাকা দিয়ে এক কেজি লেবু কিনেছেন। 

ইমরান নামে আরেক ক্রেতা জানান, গত শুক্রবারের হাটে তিনি মাত্র এক কাপ চায়ের দামে ২১ কেজি লেবু কিনেছেন।

তিনি জানান, হাটে লেবু বিক্রি হচ্ছিল না। এক বিক্রেতা দোকানে চা খাচ্ছিলেন। কিন্তু তার কাছে কোনো টাকা ছিল না। পরে তার চায়ের টাকা পরিশোধ করে দেওয়ার বিনিময়ে ২১ কেজি লেবু দিয়ে দেন।  

লেবু চাষি সাবেক ইউপি সদস্য মাহাবুর রহমান জানান, তার নিজের দুই বিঘা জমিতে লেবু বাগান রয়েছে। এলাচি ও চায়না থ্রি জাতের লেবু চাষ করেছেন। বাগানে বিপুল পরিমাণে লেবু ধরেছে। কিন্তু ক্রেতা নেই। বাইরে থেকেও তেমন ক্রেতা এ অঞ্চলে আসছেন না। ফলে গাছ থেকে উত্তোলন না করায় বাগানেই মাটিতে পড়ে পচে যাচ্ছে। 

লেবু ব্যবসায়ী নূরপুর মালঞ্চি গ্রামের মমতাজ উদ্দিন জানালেন, চলতি মৌসুমে লেবু বিক্রি করে পরিবহণ খরচই উঠছে না। উৎপাদন ও শ্রমিকের খরচ দিয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সবজিসহ প্রায় সব জিনিসের দামই বাড়ছে। কিন্তু লেবুর দাম দিন দিন কমে যাচ্ছে। 

ব্যবসায়ীরা মনে করেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে বাণিজ্যিকভাবে লেবু চাষে আগ্রহ হারাবেন কৃষকরা। 
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী জানান, বাণিজ্যিকভাবে অনেক কৃষক লেবু চাষ করেছেন। তা ছাড়া বাগানের ছায়াতে কিংবা জমির আইল দিয়ে সাথি ফসল হিসাবেও কৃষকরা লেবু চাষ করছেন। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২২৫ বিঘা জমিতে লেবু চাষ হয়েছে। বাজারে আমদানি বেশি হওয়ার কারণে লেবুর দাম বর্তমানে কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।

শেয়ার করুন