২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১০:১০:২১ অপরাহ্ন
মোহনপুরে গ্রাম পুলিশকে মারধরে প্রার্থীর ৭ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-১০-২০২২
মোহনপুরে গ্রাম পুলিশকে মারধরে প্রার্থীর ৭ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনের পোস্টার সাঁটাতে গিয়ে গ্রাম পুলিশ মারধন ও একজনকে গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে মোহনপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন উপজেলার ধুরইল ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার আব্দুল ওহাব।


মোহনপুর থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম জানান, রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে আব্দুল ওহাব থানায় উপস্থিত হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে ১৯ জনকে আসামী করা হয়েছে। বাকি ১২ জন অজ্ঞাত আসামী।


ওসি বলেন, মামলায় গ্রাম পুলিশ আসাদুল ইসলাম (২২) ও সোহাগ হোসেনকে (২০) মারধর এবং মহব্বতপুর গ্রামের মোতালেব হোসেনকে (৪০) গাড়ি চাপা দিয়ে জখম করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়াও মামলায় রাতে জোরপূর্বক ইউনিয়ন পরিষদের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশেও অভিযোগ এনেছেন আব্দুল ওহাব।


মামলার আসামীরা হলেন, রাজশাহী নগরীর হড়গ্রাম এলাকার এ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফের ছেলে ও জেলা পরিষদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামানের প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়ক আবু রায়হান মাসুদ (৫২), বাগমারা উপজেলার বড়বিহানালী গ্রামের নাসির উদ্দীন প্রামাণিকের ছেলে আব্দুল মালেক নয়ন (৩৫), রাজশাহী নগরীর হড়গ্রাম এলাকার মৃত সাইফুদ্দিন মিয়ার ছেলে আবু সুফিয়ান সম্রাট (৩০), মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আশিকুল ইসলাম নিটু (৪৫), মৃত এ্যাড. মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে এ্যাড. গোলাম আযম ফারুক (৫৩), মনিমুল হকের ছেলে উজ্জ্বল হোসেন (৩০) ও নগরীর লক্ষীপুর এলাকার মৃত নকির উদ্দিন শেখের ছেলে মোহাম্মাদ আলী (৫৩)।


বুধবার (৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত পৌনে ১১টার দিকে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ধুরইল ইউনিয়ন পরিষদে পোস্টার লাগাতে গিয়ে মারধরের শিকার হন গ্রাম পুলিশ। খবরে পেয়ে সেখানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপস্থিত হলে তার উপর চড়াও হন স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামানের কর্মীরা। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের ধরে গণধোলাই দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ গিয়ে সাতজনকে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়। তবে সকালে স্বতন্ত্র প্রার্থীর আইনজীবীর জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।


ধুরইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন জানান, বুধবার দিবাগত রাতে তিনটি মাইক্রোবাস নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামান আকতারের মোটরসাইকেল প্রতীকের পোস্টার সাটাতে যান আবু রায়হান ও তার কয়েকজন সহযোগী। এসময় তারা স্থানীয় এমপি আয়েন উদ্দিন ও জেলা পরিষদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধ মীর ইকবালকে গালিগালাজ করতে থাকেন। গালাগালির কারণ যানতে চাইলে গ্রাম পুলিশ আসাদুল ইসলামকে তারা মারধর করে। এ ঘটনা জানতে পেরে গ্রামবাসী তাদের ঘিরে রেখে গণধোলাই দেয়। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়।


চেয়ারম্যান বলেন, গ্রামবাসীর রোশানলে পড়ে পালাতে গিয়ে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে তাদের মাইক্রোস চাপা দেয়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার পর গ্রামবাসী গাড়ি ভাংচুর করে।


মোহনপুর থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম জানান, ধুরইল এলাকায় জেলা পরিষদ নির্বাচনের পোস্টার টানাতে এসে ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদারকে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ সময় পালাতে গিয়ে মাক্রোবাসের ধাক্কায় একজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে গ্রামবাসীর রোশানাল থেকে সাতজনকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়া হয়। সকালে স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামানের আইনজীবী গোলাম মোস্তফার জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।


স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামান আখতার বলেন, আমার নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়কারী এ্যাড. আবু রায়হান মাসুদসহ বেশ কিছু কর্মী দুইটি গাড়ি নিয়ে পোস্ট টানানোর জন্য ইউনিয়ন পরিষদে যায়। সেখানে পোস্টার টানাতে গ্রাম পুলিশ বাধা দেয়। এ নিয়ে তার সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। কিছুক্ষন পর সেখানে আসেন চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন। পরে তার নেতৃত্বে আমার কর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা হয়। এসময় তারা আমাদের দুইটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এর কিছুক্ষন পরপরই সেখানে স্থানীয় এমপি উপস্থিত হয়ে তাদের ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

শেয়ার করুন