২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ১২:৫২:৪৩ পূর্বাহ্ন
বাগমারায় বন্ধ হচ্ছে না পুকুর খনন
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-১১-২০২২
বাগমারায় বন্ধ হচ্ছে না পুকুর খনন

রাজশাহীর বাগমারায় কৃষি জমিতে পুকুর খননের ফলে বিপাকে পড়েছেন শত শত কৃষক। যত্রতত্র পুকুর খননে ফসলী জমি কমছে। এছাড়া বিল-খালে পুকুর খননে আবাদী জমি জলবদ্ধতায় ফসল করতে না পেরে বিড়াম্বনায় পড়তে হচ্ছে কৃষকদের।

কৃষি জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করে পুকুর খনন করায় আবাদি জমির পরিমান কমে যাচ্ছে দিনের পর দিন। এতে চাষাবাদ পড়েছে হুমকীর মুখে।

এদিকে অবৈধভাবে জোরপূর্বক পুকুর খননের অভিযোগে শনিবার বিকালে উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের রামরামা গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে দু’টি ভেকু মেশিন জব্দ করা হয়।

এ সময় পুকুর খননকারী এবাদুল হক, মোস্তাফিজুর, মিঠুন পালিয়ে গিয়ে রক্ষা পান। ঘটনাস্থলে ভেকু চালকসহ দুই জনকে ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করা হয়েছে। তারা নিজের অপরাধ স্বীকার করায় তাদের অপরাধে ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদা খানম।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রামরাম দেবত্তপাড়া নিচে যশোর বিলের বটতলায় তিন ফসলি ৭০ বিঘা জমিতে জোরপূর্বক অবৈধভাবে পুকুর খননের জন্য সকল প্রস্ততি নিয়ে দুটি ভেকু মেশিন নামায় স্থানীয় প্রভাবশীরা।

এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষক তাদের ভোগ দখলীয় আবাদি তিন ফসলি জমিতে জোরপূর্বক অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিকট গত ১১ নভেম্বর গোলেমান ফৌজদার, বাদেশ আলীসহ এলাকার ৩৩ জন কৃষককের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

আবাদি তিন ফসলি জমিতে জোরপূর্বক অবৈধভাবে পুকুর খননে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাগমারা থানার পুলিশের সহায়তায় স্থানীয় প্রশাসন বিবাদী গণের বিরুদ্ধে শনিবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতে ব্যবস্থা নিয়েছেন।

এদিকে বাগমারায় আবাদি কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও বর্ষা মৌসুমের পানি নেমে যাওয়ার পর এলাকায় পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। পুকুর খননকারী চক্র প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে পুকুর খনন অব্যাহত রেখেছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ উপজেলা প্রশাসনসহ থানা পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে পুকুর খননে নেমে পড়েছে স্থানীয় একটি চক্র।

অভিযোগকারীদের দাবি উপজেলার বড়বিহানালী, মাড়িয়া ও গোয়ালকান্দি ইউনিয়নে এরই মধ্যে পুকুর খনন অব্যাহত রয়েছে।

বড়বিহানালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মিলন জানান, গত ২/৩ দিন আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে তিনি এক গ্রাম পুলিশকে বিহানালী বাজারের সামনের বিলে পুকুর খনন দেখতে যেতে বলেন।

এ সময় পুকুর খননকারী আকরাম হোসেন ও তার সহযোগী আমিনুল ইসলাম ওই গ্রাম পুলিশকে ঘটনাস্থলে পিটিয়ে আহত করে। বিষয়টি তাৎক্ষনিক উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তিনিই অভিযোগ চান। পরে তিনি ভ্রাম্যমান আদালত না দিয়ে থানায় যাবার কথা বলেন।

এ ঘটনায় বড় বিহানালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হতভম্ব হয়ে পড়েন। পরে থানা পুলিশ গিয়ে পুকুর খনন বন্ধ করলেও পরে আবার চালু হয়।

বিষয়টি পুনরায় ইউএনও সাইদা খানমকে জানালে তিনি একইভাবে থানায় যোগাযোগ করতে বলেন। এমতবস্থায় পুকুরটি খনন কাজে এলাকাবাসী হতভম্ব হয়ে পড়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদা খানম জানান, উপজেলা অবৈধ পুকুর খনন করার কোন সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলেই অভিযান পরিচালিত হবে।

এছাড়া বড়বিহানালী ইউনিয়নে পুকুর খননের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযুক্তরা পালিয়ে যাওয়ায় ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি।

শেয়ার করুন