২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০১:২৬:২৩ পূর্বাহ্ন
ক্যাশলেস সোসাইটির যুগে বাংলাদেশ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০১-২০২৩
ক্যাশলেস সোসাইটির যুগে বাংলাদেশ

‘স্যার জুতা পলিশ করেন...নগদ টাকা দিতে হবে না। কিউআর কোডের মাধ্যমে টাকাটা আমাকে মোবাইলের দিয়ে দিলেই হবে। এখন আর খুচরা টাকা নিয়ে ঝামেলা নাই স্যার।’ রাজধানীর মতিঝিলের সেনা কল্যাণ ভবনের সামনের ফুটপাতে বসে এভাবেই সেবা নেওয়ার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন শাপলা। 

প্রথমবার দেখে বোঝার উপায় নেই ফুটপাতে কিউআর কোডের মাধ্যমে লেনদেনের বিষয়টি। কিছুটা সামনে যেতেই চোখে পড়ল বাক্সের ওপর রাখা মোবাইল ব্যাংকিং রকেটের কিউআর কোড। বুধবার দুপুরে মতিঝিলের সেনা কল্যাণ ভবনের সামনের গিয়ে দেখা গেল এ চিত্র। 

বুধবার ক্যাশলেস বা নগদবিহীন বাংলাদেশ প্রচারণার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। সর্বসাধারণকে কিউআর কোডের পেমেন্টসহ সব ডিজিটাল লেনদেনের সুফল সম্পর্কে জানাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ প্রচারণার স্লোগান- ‘সর্বজনীন পরিশোধ সেবায় নিশ্চিত হবে স্মার্ট বাংলাদেশ’। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে মতিঝিল এলাকায় চা–দোকান, মুদিদোকান, হোটেল, মুচিসহ ভাসমান বিক্রেতাদের কিউআর কোড সুবিধা দেওয়া হয়েছে। 

এর মাধ্যমে সেবা বিল পরিশোধ করতে পারছেন গ্রাহকেরা। ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ উদ্যোগের আওতায় শ্রমনির্ভর অতিক্ষুদ্র ভাসমান উদ্যোক্তা (চা বিক্রেতা, ঝালমুড়ি বিক্রেতা, সবজি বিক্রেতা, মাছ বিক্রেতা), বিভিন্ন প্রান্তিক পেশায় (মুচি, নাপিত, হকার) নিয়োজিত সেবা প্রদানকারীদের বিল গ্রহণ পদ্ধতিকে ডিজিটাল ও প্রাতিষ্ঠানিক করার উদ্দেশ্যে ব্যক্তিক রিটেইল হিসাব খোলা হচ্ছে। এ হিসাবের অধীন যেসব ব্যবসায়ী, তাঁদের ব্যবসায়িক লেনদেন সম্পন্ন করবেন, তাঁরা মাইক্রো-মার্চেন্ট হিসেবে গণ্য হচ্ছেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, এতদিন একটি ব্যাংকের কিউআর কোডে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের গ্রাহক পেমেন্ট করতে পারত। এখন এক ব্যাংকের কিউআর কোড থাকলে যেকোনো ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন করা যাবে। উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, ধরেন চা দোকানির ইসলামী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে। ওই দোকানদার তো ইসলামী ব্যাংকের কিউআর কোড দেবেন। এখন আপনি চা বিস্কুট খেয়ে বিল দেবেন। কিন্তু আপনার অ্যাকাউন্ট ডাচ বাংলা ব্যাংকে। এখন কী করবেন? এটার সমাধান দেবে সর্বজনীন বাংলা কিউআর কোড। এখান থেকে যেকোনো ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন করতে পারবেন। অর্থাৎ দোকানদারকে তার চায়ের বিল ডাচ-বাংলা কিউআর কোডে সরাসরি পরিশোধ করতে পারবেন।

জানা গেছে, প্রথমে ১০টি ব্যাংক এ কার্যক্রমে যুক্ত হবে। দেশব্যাপী এ কার্যক্রম চলবে। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ও কার্ড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানও এ সঙ্গে যুক্ত থাকবে। বাংলা কিউআর কোডে বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয়ে এ উদ্যোগে যেসব ব্যাংক যুক্ত হয়েছে এগুলো হলো- ডাচ বাংলা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, পূবালী ব্যাংক ও ওয়ান ব্যাংক। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠান বিকাশ, এমক্যাশ, রকেট ও কার্ড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মাস্টারকার্ড, ভিসা ও অ্যামেক্স এ সেবায় যুক্ত হয়েছে।

শেয়ার করুন