বুধবার (২৫ জানুয়ারি) গাজীপুরের মৌচাকে জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ৩২তম এশিয়া প্যাসিফিক ও একাদশ জাতীয় স্কাউট জাম্বুরির সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।
তিনি বলেন, আজকের যে বাংলাদেশ আমরা দেখছি, তা কিন্তু আগে ছিল না। বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে নানা ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করতে হয়েছে। ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতায় আসি, তারপর থেকেই দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই, দেশ আরও উন্নতি করুক। যেখানে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ স্থান পাবে না। সাম্প্রদায়িকতা-সন্ত্রাস থেকে মুক্ত থাকবে। কাজেই আজকের শিশু যারা বড় হবে তারা বাংলাদেশে উদার মন নিয়ে বড় হবে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্বু হবে। দেশকে সুন্দরভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ও দেশ গঠনে কাজ করবে।
‘স্কাউটিং নতুন সদস্যদের নৈতিক ও জীবনধর্মী প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। আর তরুণদের মধ্যে আধুনিক, প্রগতিশীল, সৃজনশীল গুণাবলী বিকশিত হয়। ফলে স্কাউট সদস্যরা সেবার মন্ত্রে দীক্ষিত হচ্ছে, সচেতন ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলছে’, বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের লক্ষ্যই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আর সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাব।
বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯৭১ সালে ৭ মার্চের ভাষণে ঘোষণা দিয়েছিলেন, সাড়ে সাত কোটি মানুষকে তোমরা কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। আমরা এগিয়ে যাব, উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলব।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন,‘আজকের বাংলাদেশ দেখে আমাদের যে ধারণা, এক সময় বাংলাদেশ কিন্তু এটা ছিল না। ক্ষুধা, দারিদ্র্যতা নিত্য সঙ্গী ছিল। আমাদের প্রচেষ্টা হচ্ছে- ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ।’
স্মার্ট জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আজকে যতদূর এগিয়েছে, ভবিষ্যতে আমাদের আজকের শিশু-কিশোর-তরুণ বাংলাদেশকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ঃ
এ সময় তিনি স্কাউটদের উদ্দেশে বলেন, স্কাউটদের মধ্যেই সুপ্ত আছে আমাদের দেশের ভবিষ্যত, রাজনৈতিক নেতা, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, অর্থনীতিবিদ, প্রকৌশলী, কবি-সাহিত্যিক, প্রশাসক শিক্ষক, প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য, যারা দেশের সেবা করছে। তোমাদের মাঝ থেকেই সকলে উঠে আসবে।
শেখ হাসিনা বলেন, তোমরাই পারবে আগামীতে দেশকে এগিয়ে নিতে। তোমাদের মাঝ থেকেই তো সেই নেতৃত্ব গড়ে উঠবে। সেই ভরসা আমার আছে। তোমরা সেটা পারবে।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করেছি, ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি। এই সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকালে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আমাদের এখানেই থেমে থাকলে চলবে না, বাংলাদেশকে অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে।’
সরকারের লক্ষ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ, তথ্যজ্ঞানসম্পন্ন একটি জাতি; যে জাতি হবে স্মার্ট জাতি। আমাদের সরকার, আমাদের অর্থনীতি, আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের জাতিকে আমরা স্মার্ট জাতি হিসেবে গড়ে তুলব। আর সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’