২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৯:৪৩:১৮ অপরাহ্ন
বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে চলবে না দেশ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০২-২০২৩
বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে চলবে না দেশ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে চলবে না বাংলাদেশ। প্রত্যেকটা পরিবারকে আত্মনির্ভরশীল হিসাবে গড়ে তুলতে চায় সরকার।

আমরা মোবাইল ফোন সবার হাতে পৌঁছে দিয়েছি। প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশটা এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বৈশ্বিক প্রতিকূল পরিস্থিতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে খাদ্যশস্যের ফলন বাড়াতে গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার জন্য কৃষিবিদদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি ব্রি-তে বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্র উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন আমাদের খাদ্য আমরা উৎপাদন করব। ১৯৭৩ সালে তিনি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটকে আইন করে প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে গবেষণার ওপর সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, আমাদের যুব সমাজকে কৃষি কাজে আরও সম্পৃক্ত করা দরকার।

আমার মনে হয় স্কুল জীবন থেকে সম্পৃক্ত করা দরকার। মাঠে কাজ করা বা ফসল ফলানো এটা অত্যন্ত গৌরবের বিষয়, লজ্জার বিষয় নয়। সেভাবেই আমাদের দেশের মানুষকে গড়ে তুলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শিখে মাঠে যেতে চায় না।

এমনকি বাবা কৃষক সেটা বলতেও লজ্জা পেত। আজকে কিন্তু সেই লজ্জাটা আর নেই। সে লজ্জাটা আমরা ভেঙে দিয়েছি। করোনাকালে যখন আমাদের কৃষি শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না ধান কাটতে, আমি তখন আমাদের ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে সহযোগী সংগঠনের সব ছেলেমেয়েকে নির্দেশ দিলাম তোমরা মাঠে যাও, ধান কাটো কৃষকের পাশে। তারা কিন্তু ধান কেটেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯৬ সালে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে তখন আমরা কি পেয়েছিলাম-৪০ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি ছিল বাংলাদেশে। খাদ্যের জন্য হাহাকার ছিল। উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সবসময় মঙ্গা লেগেই থাকত। মানুষের পেটে খাবার ছিল না, শরীরে হাড় ও চামড়া ছাড়া কোনো মাংস ছিল না-এটা আমার নিজের চোখে দেখা।

৮১ সালে বাংলাদেশে ফিরে যখন পুরো বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াই তখন মানুষের দুরবস্থা আমি নিজেই দেখি। কাজেই আমাদেরও উদ্যোগ ছিল, এদেশের মানুষের জন্য খাদ্যের ওপর বেশি কাজ করতে হবে। তাই ৯৬ সালে আমরা নতুন কৃষি সম্প্রসারণ নীতি ১৯৯৬ প্রদান করি এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি আমরা হাতে নিই।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। বক্তব্য দেন কানাডার গ্লোবাল ইনস্টিটিউট অব ফুড সিকিউরিটির (সিইইউ) নির্বাহী পরিচালক ড. স্টেভিন ওয়েব, ফিলিপাইনের ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিচার্স ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর জেনারেল ড. জেইন বালিই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর প্রমুখ।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, সিমিন হোসেন রিমি এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ এমপি, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক আতাউল্যাহ মণ্ডল, সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, ধান ও কৃষি বিজ্ঞানীসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন ।

প্রধানমন্ত্রী ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি ব্রি’র গৌরব ও সাফল্যের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে পায়রা ও বেলুন উড়ান। এরপর বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। পরে ব্রি’র ইনোভেশনস পরিদর্শন শেষে অনুষ্ঠানের দ্বি

তীয় পর্বে আলোচনা সভায় যোগ দেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের ৫টি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন।

শেয়ার করুন