২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৬:৩৩:৫৫ অপরাহ্ন
কাস্টমস আধুনিকায়নে কেনা হচ্ছে ২১৮ কোটি টাকার সফটওয়্যার
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৩-২০২৩
কাস্টমস আধুনিকায়নে কেনা হচ্ছে ২১৮ কোটি টাকার সফটওয়্যার

দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আরো এক কার্গো এলএনজি আমদানি এবং স্বল্পমূল্যে বিক্রির জন্য ৮ হাজার টন মসুর ডাল এবং কাস্টমস আধুনিকায়নের জন্য ২১৮ কোটি টাকার একটি সফটওয়্যার কেনার প্রস্তাবসহ ৭টি ক্রয়প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ২৯৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির ভার্চুয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সভাশেষে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের জানান, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়ন এবং কাস্টমস আধুনিকায়ন ও জোরদারকরণ প্রকল্পের আওতায় সফটওয়ার ক্রয়ের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। তিনি আরো জানান, রাষ্ট্রীয়পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কো থেকে প্রথম লটে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে দুই কোটি ৪৪ লাখ ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশী মুদ্রায় ২৬২ কোটি ১২ লাখ ৯২ হাজার টাকা। প্রতি টন ডিএপি সারের দাম পড়বে ৬১০ ডলার। এর আগে মরক্কো থেকে সর্বশেষ ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রতি টনের দাম ছিল ৭১০ ডলার।
তিনি জানান, সভায় কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (কাফকো) কাছ থেকে ১৪তম লটে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি টনের দাম ৩২৭.৬২৫ ডলার হিসেবে ৩০ হাজার টন সারের দাম পড়বে ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৭৫০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশী মুদ্রায় ১০৫ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

অতিরিক্ত সচিব জানান, বাংলাদেশ আঞ্চলিক যোগাযোগ প্রকল্প-১ ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়ন এবং কাস্টমস আধুনিকায়ন ও জোরদারকরণ প্রকল্পের আওতায় সফটওয়্যার সলিউশন অ্যান্ড অটোমেটেড রিক্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সফটওয়ার ক্রয়ের লক্ষ্যে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত ৪টি প্রতিষ্ঠানের কাছে রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল ইস্যু করা হলে তিনটি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দাখিল করে। এর মধ্যে দু’টি প্রস্তাব কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। প্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ওয়েব ফন্টাইন গ্রুপ এফজেড-এলএলসি, দুবাই, ইউএইর কাছ থেকে সফটওয়ারটি সংগ্রহ করা হবে। এতে ব্যয় হবে ২১৭ কোটি ৯৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা। তিনি জানান, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) আইন-২০২১’-এর আওতায় স্পট মার্কেট হতে (২০২৩ সালের ৫ম) এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। সিসিইএ সভার অনুমোদনক্রমে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত ২১টি প্রতিষ্ঠানের সাথে এমএসপিএ চুক্তি চূড়ান্ত করা হয়। পেট্রোবাংলা কর্তৃক এক কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য ২১টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ছয়টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। তার মধ্যে পাঁচটি প্রস্তাব রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ কমিটির (পিপিসি) সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স এক্সেলারেট এনার্জি এলপি, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতি ইউনিট ১৩.৬৯ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম পড়বে ৫৭৮ কোটি ৬৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা।


সভায় আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৮ হাজার টন মসুর ডাল ক্রয়ের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে মসুর ডাল বিক্রির লক্ষ্যে আট হাজার টন মসুর ডাল ক্রয়ের জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে একটি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। প্রস্তাবটি কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান ভারতের উমা একক্সপো প্রাইভেট লিমিটেড (স্থানীয় এজেন্ট: ফিউচার ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, ঢাকার কাছ থেকে প্রতি টন ৮৬৮ ডলার হিসেবে ৮ হাজার টন মসুর ডাল ক্রয়ে ব্যয় হবে ৭২ কোটি ৯১ লাখ ২০ হাজার টাকা। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম পড়বে ৯১.১৪ টাকা।


অতিরিক্ত সচিব বলেন, সভায় ‘বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর সড়কের বরিশাল থেকে ভোলা হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের ভেরিয়েশন প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। প্রকল্পের চুক্তি অনুসারে পূর্ত কাজ বাস্তবায়নকালে কিছু টেন্ডারভুক্ত/ টেন্ডার বহির্ভূত আইটেম হ্রাস/বৃদ্ধি হওয়ায় ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ১৫ কোটি ২১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৩৬ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয়প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
তিনি বলেন, টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ফর রোড ট্রান্সপোর্ট কানেক্টিভিটি ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটি প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে পিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত সর্বোচ্চ স্কোর অর্জনকারী দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) এসএমইসি, অস্ট্রেলিয়া; (২) ওসিজি, জাপান; (৩) দোহওহা ইঞ্জিনিয়ারিং কোং কোরিয়া; (৪) এসিই, বাংলাদেশ এবং (৫) ডিডিসি, বাংলাদেশকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪৪ কোটি ৪২ লাখ ২৬ হাজার টাকা। এর আগে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ‘নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বেসরকারি অপারেটর নিয়োগ’ প্রকল্পটি পিপিপি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।

শেয়ার করুন