স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ঈদের আগে তিন দিন রড, সিমেন্ট, বালুসহ নির্মাণসামগ্রী বহনকারী ট্রাক ও লং ভেহিকেল বা ট্রেইলার চলাচল বন্ধ থাকবে। ঈদের পরের দিন থেকে এগুলো আবার চালু হয়ে যাবে। এসব ছাড়া পণ্যবাহী অন্যান্য ট্রাক চলবে। নিত্যপণ্যবাহী কিংবা রপ্তানিমুখী পণ্যের ট্রাক চলবে।
বুধবার ঈদুল ফিতরের সময় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ ও ছুটি প্রদান, সড়ক মহাসড়ক নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখা নিয়ে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ঈদুল ফিতরের ছুটির সময় ১৯, ২০ ও ২১ এপ্রিল শিল্পাঞ্চলের ব্যাংকের যে সমস্ত শাখা প্রয়োজন, সেগুলো খোলা থাকবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে- পবিত্র ঈদুল ফিতরের সময় দেশব্যাপী সার্বিক আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে। আমাদের পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীতে যারা জড়িত তারা সার্বক্ষণিক কাজ করবেন। এতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধকল্পে ইউনিফর্মধারী পুলিশের সঙ্গে গোয়েন্দা বাহিনীও কাজ করবেন।
তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন এবং টাকা পরিবহণের জন্য মানি এসকর্ট প্রদান, জাল টাকা বিস্তার রোধও আমাদের করণীয় কাজের মধ্যে থাকবে। ঈদ উপলক্ষে যাতে জনসাধারণ নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারে সেজন্য মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে রাত্রিকালীন নিরাপত্তা প্রদানসহ পুলিশ বাহিনী, নারী পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ নিয়োজিত থাকবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি শুরুর আগেই মার্চ মাসের বেতন-বোনাস পরিশোধের জন্য বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা অঙ্গীকার করে গেছেন। যদি তারা পারেন তবে এপ্রিল মাসের বেতন দিয়ে দেবেন। এটার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
যানজট এড়াতে পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, সাভার-আশুলিয়াসহ অন্যান্য শিল্পাঞ্চল এলাকায় কেউ যাতে পরিস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শিল্প পুলিশ এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
তিনি বলেন, দেশের বড় বড় এবং যে সমস্ত মার্কেটে প্রয়োজন ফায়ার সার্ভিস অগ্নিনির্বাপণ মহড়া প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেবে ঈদের আগেই।
সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দুষ্কৃতকারী, মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা রোধে গোয়েন্দা পুলিশ তৎপর আছে এবং কাজ করছে। মাদক, চোরাচালান রোধে সীমান্ত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার জন্য বিজিবিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক সার্ভে করে জানিয়েছেন ঈদের সময় সারা দেশে প্রায় ৯৮ হাজার স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
পহেলা বৈশাখ ও ঈদকে কেন্দ্র করে কোনো নিরাপত্তা শঙ্কা দেখছেন কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যে রিপোর্ট করেছে, এ ধরনের কোনো ঝুঁকি নেই। তবে আপনারা জানেন নববর্ষের সময় অনেকেই অনেক কিছু বলে থাকেন। সেজন্য অনেকেই রটনা রটানো ও ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা-প্রচেষ্টা করবেন। তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবদিক দিয়ে সেগুলো মনিটর করছে। আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত বড় কোনো নিউজ আসেনি।