২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ০৭:৫০:৩৩ অপরাহ্ন
আবারও পরিবেশ পদক পেল রাজশাহী সিটি করপোরেশন
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৬-২০২২
আবারও পরিবেশ পদক পেল রাজশাহী সিটি করপোরেশন

পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য জাতীয় পরিবেশ পদক-২০২১ অর্জন করেছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে দ্বিতীয় বারের মতো রাজশাহী সিটি করপোরেশন জাতীয় পরিবেশ পদক অর্জন করে। রোববার বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এই পদ গ্রহন করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২২ উপলক্ষে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা-২০২২ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলা-২০২২ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের হাতে জাতীয় পরিবেশ পদক তুলে দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপি।

অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ, সচিব ফারহিনা আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ২০১২ সালে প্রথম জাতীয় পরিবেশ পদক অর্জন করে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। ২০১২ সালের ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের হাতে জাতীয় পরিবেশ পদক তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিপুল পরিমাণ বৃক্ষরোপনসহ বহুমুখী উদ্যোগের কারণে ২০১৬ সালে বাতাসে ক্ষতিকর ধূলিকণা কমাতে বিশ্বের সেরা শহর নির্বাচিত হয় রাজশাহী। এছাড়া পরিবেশবান্ধব শহর হিসেবে রাজশাহী অর্জন করেছে ‘এনভায়রনমেন্ট ফ্রেন্ডলি সিটি অফ দ্যা ইয়ার-২০২০’ সম্মাননা। এর আগে ২০০৯ সালেও বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার লাভ করে রাজশাহী সিটি করপোরেশন।।

অনুষ্ঠান শেষে রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্ব পরিবেশ দিবসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মধ্যে প্রতিষ্ঠানিক পর্যায়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনকে জাতীয় পরিবেশ পদক-২০২১ প্রদান করেছেন। পদক প্রদান করায় আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ।

রাসিক মেয়র আরো বলেন, আমি ও আমার সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য বছরব্যাপী অনেক কাজ করি। বৃক্ষরোপণ, পরিচর্যা করা, গ্রিন জোন তৈরি করা, ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা, দুর্গন্ধ না রাখা এবং পরিবেশের যত্ন আমরা করি। এই কারণে ২০১২ সালে আমরা প্রথমবারের মতো জাতীয় পরিবেশ পদক পেয়েছিলাম। দ্বিতীয়বারের মতো পদক প্রাপ্তিতে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী-শ্রমিকগণ, সার্বিকভাবে রাজশাহীর জনগণ খুবই উদ্বুদ্ধ এবং আরো বেশি করে পরিবেশ সংরক্ষণের ব্যাপারে মনযোগী হবে। এটি বাংলাদেশের জন্য দৃষ্টান্ত হবে।

পরিবেশ উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় জাতীয় পরিবেশ পদক-২০২১-এর জন্য দুই ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে মনোনিত করা হয়। পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ ক্যাটাগরিতে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার এম, এ মতিন (মতিন সৈকত) এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশন মনোনীত হয়েছে।

এছাড়াও পরিবেশবিষয়ক শিক্ষা ও প্রচার ক্যাটাগরিতে ব্যক্তিগত পর্যায়ে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন ঢাকা জেলার ইনাম আল হক এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে বেসরকারি পরিবেশ, উন্নয়ন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডেজেনাস নলেজ (বারসিক)’।

জাতীয় পরিবেশ পদকপ্রাপ্ত প্রত্যেক ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকে ২২ ক্যারেট মানের দুই তোলা ওজনের স্বর্ণের বাজারমূল্যসহ আরো ৫০ হাজার টাকার চেক, ক্রেস্ট এবং সনদপত্র প্রদান করা হবে। এ পদক বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রদান করা হয়।

রাসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্বগ্রহণের পর সবুজায়ন ও পরিবেশ উন্নয়নে বেশি গুরুত্ব দেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। রাসিক মেয়রের নেতৃত্বে নিরলস প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্যকর, সবুজ ও পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে রাজশাহী মহানগরী দেশসেরা হয়েছে। নগর উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের কারণেই পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর, দৃষ্টিনন্দন, সবুজ, উন্নত ও বাসযোগ্য পরিবেশবান্ধব শহর পেয়েছে মহানগরবাসী।

নগরীর প্রধান সড়ক বিভাজক, সড়ক দ্বীপে এবং ফুটপাতে লাগানো হয়েছে সৌন্দর্য্যবর্ধক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। সবুজ হয়েছে প্রায় ৩০ কি.মি. রাস্তার সড়ক বিভাজন ও চত্বর। ২০২১-২২ মৌসুমে রাসিকের উদ্যোগে প্রায় ৪২,৪০০টি গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। প্রায় ৩ লক্ষাধিক হেজ জাতীয় গাছ রাস্তার আইল্যান্ড ও শহরের ফাঁকা জায়গায় লাগানো হয়েছে। এছাড়া ২০২১-২২ শীত মৌসুমে প্রায় ১,৬৪,৮০০ টি বিভিন্ন প্রজাতির শীতকালীন মৌসুমী ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে নগরীর বিভিন্ন সড়কের আইল্যান্ডে ও চত্বরে। মহানগরীর প্রায় ১৮০০টি গাছে নামফলক লাগানো হয়েছে।

শেয়ার করুন