২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:২১:৪৩ অপরাহ্ন
সিরাজগঞ্জে ৩১৫ চরমপন্থির আত্মসমর্পণ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৫-২০২৩
সিরাজগঞ্জে ৩১৫ চরমপন্থির আত্মসমর্পণ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন বিভিন্ন চরমপন্থি দলের ৩১৫ নেতা ও সদস্য। রোববার (২১ মে) দুপুর ২টার দিকে সিরাজগঞ্জ হাটিকুমরুল র্যাব-১২ এর কার্যালয়ে চরমপন্থিরা আত্মসমর্পণ করেন।


তারা অস্বাভাবিক জীবন ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসায় তাদের স্বাগত ও ধন্যবাদ জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।



আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও বগুড়ার ৩১৫ জন চরমপন্থি সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। এরা নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সংগঠন পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টি এমএল লালপতাকা, জনযুদ্ধ, সর্বহারা, কাদামাটি পার্টি ও নকশালের আঞ্চলিক নেতা ও সদস্য ছিলেন। আত্মসমর্পণকালে চরমপন্থিরা বিভিন্ন ধরনের ২১৯টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিপুল সংখ্যক দেশীয় অস্ত্র জমা দেন।


‘সন্ত্রাসী পেশা ছাড়ি, আলোকিত জীবন গড়ি’ এই স্লোগানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সয়ে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন চরমপন্থি দলের সদস্যরা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের কাছে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছিলেন। তারা এখন বিভিন্ন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন। আজ সাত জেলার ৩১৫ জন চরমপন্থি আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে তারাও নিশ্চয় সুস্থ ও সুন্দর জীবন শুরু করবেন।





তিনি বলেন, পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা আর আগের মতো নেই। তারা বর্তমানে জলদস্যু, বনদস্যু, চরমপন্থি, মাদক সন্ত্রাসীদের দমন করতে সক্ষম। যেকোনো ধরনের নাশকতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নির্মূলে র্যাব সোচ্চার। এই অনুষ্ঠানে যেসব চরমপন্থি আত্মসমর্পণ করলেন, তাদের মধ্যে অনেকেই শিক্ষিত। তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার নির্দেশনা দিয়েছেন।


যারা আত্মসমর্পণ করলেন এবং যারা এখন আত্মসমর্পণ করেননি যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা আত্মসমর্পণ করলে তাদেরও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ রয়েছে।



আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের বিভিন্ন বক্তারা বলেন, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও টাঙ্গাইলসহ দেশের বেশ কিছু জেলায় এক সময় চরমপন্থিদের দাপট ছিল। ষাট-সত্তরের দশকে বামপন্থি রাজনৈতিক দল হিসেবে এদের অনেকের আবির্ভাব হলেও পরে এক সময় অনেকেই অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। এর মধ্যে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল-লাল পতাকা), পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি (এমবিআরএম) ও পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টি (জনযুদ্ধ) অন্যতম।


এক সময় নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে বিভিন্ন দল-উপদলে বিভক্ত হতে থাকে তারা। চলতে থাকে একে অপরকে হত্যা। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়ায়। এ অবস্থায় ১৯৯৯ সালে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের হাতে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেন চরমপন্থি দলের শীর্ষ নেতাসহ শতাধিক সদস্য। এরপর ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল পাবনায় পুলিশের কাছে ৫৯৬ চরমপন্থি আত্মসমর্পণ করেছিলেন।

শেয়ার করুন