২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০১:৩২:০২ অপরাহ্ন
রাজশাহীতে মদ পান করে দাম চাওয়ায় বার ভাঙচুর
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৬-২০২৩
রাজশাহীতে মদ পান করে দাম চাওয়ায় বার ভাঙচুর

মদপানের পর দাম চাওয়ায় রাজশাহী পর্যটন মোটেলের বারে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ হৃদয়সহ তার সঙ্গে থাকা কর্মীরা বার ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তারা বারের কর্মচারীদের মারধর করেন এবং তাদের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেন।

পরিস্থিতি বেগতিক দেভে বারের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বারের কর্মচারীরা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অবরুদ্ধ করেন। পরে পুলিশ যায়। খবর পেয়ে ছাত্রলীগের নেতারাও সেখানে যান। এরপর পুলিশের কাছে ক্ষতিপূরণের মুচলেকা দিয়ে অবরুদ্ধ নেতাকর্মীদের ছাড়িয়ে আনা হয়।


পর্যটন বারের একজন কর্মচারী জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার পরে ছাত্রলীগ নেতা ইশতিয়াক আহমেদ হৃদয়ের সাথে ১২-১৩ জন নেতাকর্মী বারে যান। এরপর তারা মদপান শুরু করেন। তাদের সর্বমোট সাত হাজার ২০০ টাকা বিল হয়। বিল চাওয়া হলে হৃদয় ছাত্রলীগের পরিচয় দেন। তিনি বিল দিতে অস্বীকৃতি জানান। বিষয়টি নিয়ে তর্কবিতর্ক শুরু হলে হৃদয়ের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা দুজন কর্মচারীকে মারধর করেন। কর্মচারীরা পুলিশে ফোন করার চেষ্টা করলে দুটি মোবাইল ফোন কেড়ে আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়।


এরপর বারের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অবরুদ্ধ করা হয়। পরে পুলিশ আসে। ঘটনা জানতে পেরে রাজপাড়া থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাবিল হাসানসহ কয়েকজন নেতা সেখানে যান। এরপর ক্ষমা চান এবং ভুল স্বীকার করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তারা সেখানেই ভেঙে ফেলা কয়েকটি গ্লাসের ক্ষতিপূরণ দেন। তারপর মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান তারা।


অভিযোগ রয়েছে, ছাত্রলীগ নেতা হৃদয়ের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা বারে গিয়ে প্রায়ই ফাও মদপান করেন। বিষয়টি নিয়ে বার কর্মচারীদের সাথে মাঝে মধ্যেই ঝামেলা হয়। অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্যের জন্য বেশ কয়েকবার ছাত্রলীগ নেতা ইশিতায়াক আহমেদ হৃদয়ের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন না ধরায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


রাজপাড়া থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাবিল হাসান বলেন, ‘আমি বাইরেই ছিলাম। কর্মচারীদের সেভাবে মারধর করেননি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। সামান্য হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তবে দুটি মোবাইল ভেঙে যাওয়ায় সেগুলো আমরাই মেরামত করে দিচ্ছি। আর যা ক্ষতি হয়েছে সেগুলোর ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এরপর মুচলেকা দিলে পুলিশ নেতাকর্মীদের ছেড়ে দিয়েছে।


রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ‘আমাদের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হৃদয়ের নেতৃত্বে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। আমি কথা বলতে হৃদয়কে ফোন করেছি। কিন্তু ফোনে পাইনি। বিষয়টি নিয়ে আমি সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’


রাজশাহী পর্যটর মোটেল বারের ব্যবস্থাপক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অনেকেই মদ পানের পর মাতলামি করেন। এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও এমনটিই করেছেন। তারা বেশকিছু ক্ষতি করেছেন। ক্ষতিপূরণ নেওয়া হয়েছে। আগামিতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত হবে না মর্মে পুলিশের কাছে মুচলেকা দেওয়ায় তাদের ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে।


নগরীর রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাজল নন্দী জানান, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ক্ষমা চেয়েছেন। ক্ষতিপূরণও দিয়েছেন। তাই বার কর্তৃপক্ষ কোন অভিযোগ দেয়নি। এ জন্য তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন