পেরিয়ে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ধারণা করা হচ্ছে, আর মাত্র ২৪-২৫ ঘণ্টা পরই শেষ হয়ে যাবে টাইটানিক ধ্বংসাবশেষের উদ্দেশে গিয়ে নিখোঁজ ডুবোযানটির অক্সিজেন। এই সময়ের মধ্যে এটিকে খুঁজে পাওয়া না গেলে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে পড়বেন আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে যাওয়া তিন পর্যটকসহ পাঁচ অভিযাত্রী।
তবে রুদ্ধশ্বাস উদ্ধার অভিযানের শেষদিকে এসে সমুদ্রের তলদেশ থেকে ভেসে এল একটি সংকেত। আর সংকেতটি এসেছে সমুদ্রের তলদেশে যে এলাকাটিতে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে তার কাছাকাছি কোনো স্থান থেকেই।
বাংলাদেশ সময় সকাল সোয়া ১০টার দিকে এক টুইটে মার্কিন কোস্টগার্ড জানিয়েছে, কানাডিয়ান পি-থ্রি এয়ারক্রাফট থেকে রহস্যজনক ওই সংকেতটি শনাক্ত করা হয়। পরে যেখান থেকে সংকেতটি এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেই এলাকাতেই ডুবোজাহাজটিকে তন্ন তন্ন করে খুঁজতে শুরু করেছেন উদ্ধারকারীরা। এখন পর্যন্ত আশাব্যঞ্জক কোনো খবর পাওয়া না গেলেও হাল ছাড়েননি উদ্ধারকারীরা।
ওশানগেট এক্সপিডিশন্স নামে একটি বেসরকারি সংস্থার পরিচালনায় দ্য এক্সপ্লোরার্স ক্লাব নামে একটি সংগঠনের ভাড়ায় টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ অভিমুখে রওনা হয়েছিল পর্যটক ও অভিযাত্রী দলটি।
সংকেতটির বিষয়ে দ্য এক্সপ্লোরার্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড গ্যারিয়ট ডি ক্যাইয়া বলেছেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এখনো আশা ধরে রাখার অনেক কারণ রয়েছে।’
রিচার্ডের মতে, রহস্যজনক ওই সংকেতটি হয়তো ডুবোযানে থাকা অভিযাত্রীরাই পাঠিয়েছেন। তাঁরা বোঝাতে চাইছেন যে-তাঁরা এখনো বেঁচে আছেন।
ডুবোযানে থাকা ব্রিটিশ অভিযাত্রী হামিশ হার্ডিং ওই এক্সপ্লোরার্স ক্লাবের ট্রাস্টি বোর্ডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
জানা যায়, কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডস উপকূল থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে আটলান্টিক মহাসাগরের ৩.৮ কিলোমিটার গভীর তলদেশে পড়ে আছে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ। ১৯১২ সালে বিশাল বরফখণ্ডের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যাওয়া এই জাহাজটি তার সময়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাহাজ ছিল।
ছেলেকে টাইটানিক দেখাতে গিয়ে নিখোঁজ পাক বিলিয়নিয়ার, ফুরিয়ে আসছে অক্সিজেনছেলেকে টাইটানিক দেখাতে গিয়ে নিখোঁজ পাক বিলিয়নিয়ার, ফুরিয়ে আসছে অক্সিজেন
টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতেই পানির নিচে ডুবোযানে চড়ে রওনা হয়েছিল অভিযাত্রী দলটি। ব্রিটিশ অভিযাত্রী হামিশ হার্ডিং ছাড়াও এই দলে ছিলেন পাকিস্তানি বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ ও তার ১৯ বছর বয়সী কিশোর ছেলে সুলেমান। এ ছাড়া চালক এবং একজন গাইডও ছিলেন ডুবোযানটিতে। তারা প্রথমে একটি জাহাজে চড়ে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি গিয়েছিলেন। পরে ওই জাহাজ থেকে ডুবোযানে চড়ে ধ্বংসাবশেষের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। কিন্তু ৪৫ মিনিটের মধ্যেই মূল জাহাজের সঙ্গে ওই ডুবোযানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।