২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৯:৪৭:৪১ অপরাহ্ন
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কমাবে যানজট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৮-২০২৩
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কমাবে যানজট

আগামী সেপ্টেম্বরে খুলে দেয়া হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ। রাজধানীর কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম ধাপ খুলে দেয়া হলে যানজট অনেকাংশে কমে আসবে। এরই মধ্যেই এই অংশের নির্মাণকাজের ৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। প্রকৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ একেবারেই শেষপর্যায়ে রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের যে কোনো দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুল প্রতিক্ষিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করবেন। তবে উদ্বোধনের তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, মূল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। তবে র?্যাম্পসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। তিন ধাপে ভাগ করে এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ চলছে। প্রথম ধাপে কাওলা থেকে বনানী রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। দ্বিতীয় ধাপে বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার রেলক্রসিং পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার এবং তৃতীয় ধাপে মগবাজার রেলক্রসিং থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত বাকি অংশ। প্রকল্পে ওঠা-নামার জন্য মোট ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১টি র?্যাম্প রয়েছে। কাওলা থেকে কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ে শেষ হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম


সাখাওয়াত আকতার জানান, প্রথম দফায় ১৪টি র‌্যামসহ এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ চালু হবে। এরই মধ্যে এ কাজের প্রায় ৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। পুরো প্রকল্পের ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। মগবাজার রেলক্রসিং পর্যন্ত দুদিকের পিলার উঠে গেছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এরই মধ্যেই এক্সপ্রেসওয়ের এই অংশ পরিদর্শন করেছেন। এখন শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। এক্সপ্রেসওয়েতে স্ট্রিটলাইট, দুপাশে রেলিং বসানোর কাজ চলছে। কাওলা থেকে বনানী অংশ পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ পুরো প্রস্তুত হবে।

তিনি বলেন, কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত পথে আপাতত যে কোনো জায়গায় নামলেই ১০০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে পুরোপরি চালুর আগে তা কিছুটা শিথিল রাখার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে। টোল আদায়ের জন্য টোল প্লাজাগুলোও প্রস্তুত রয়েছে।

প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্পের ভৌত কাজের প্রথম ধাপে ১ হাজার ৪৮২টি পাইল, ৩২৬টি পাইল ক্যাপ, ৩২৫টি কলাম, ৩২৫টি ক্রস বিম, ৩ হাজার ৪৮টি আই গার্ডার নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ৩ হাজার ৪৮টি আই গার্ডার এবং ৩২৮টি ব্রিজ স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই ভৌত কাজের অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ। দ্বিতীয় ধাপে ১ হাজার ৬৩৩টি পাইল, ৩৩৫টি পাইল ক্যাপ, ৩২৩টি কলাম, ৩২০টি ক্রস বিম, ২ হাজার ৩০৫টি আই গার্ডার নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ২ হাজার ৪৪টি আই গার্ডার এবং ২৩৩টি ব্রিজ স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই ভৌত কাজের অগ্রগতি প্রায় ৬০ শতাংশ। এছাড়া প্রকল্পের ভৌত কাজের তৃতীয় ধাপের অগ্রগতি ৬ শতাংশের বেশি। পুরো প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিক হলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে- যা জিডিপিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ঢাকা-মাওয়া বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের মতো টোল দিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করা যাবে। তবে এই এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। তাই থ্র্রি-হুইলার অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও তিন চাকার কোনো যানবাহন এই এক্সপ্রেসওয়ের উপর দিয়ে চলাচল করতে পারবে না। এক্সপ্রেসওয়েতে ১১টি টোলপ্লাজা থাকবে, যার পাঁচটিই এক্সপ্রেসওয়ের উপরে। এর উপর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৮০ হাজার যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

প্রসঙ্গত, রাজধানীর আশপাশে যানবাহন চলাচল সহজ করার লক্ষে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এই প্রকল্পে সরকার দেবে ২ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা।


শেয়ার করুন