২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৬:৩১:২১ অপরাহ্ন
যে ভেলকিবাজিতে নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখতেন মতিউর
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৭-২০২৪
যে ভেলকিবাজিতে নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখতেন মতিউর

ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদ্য সাবেক সদস্য মো. মতিউর রহমান সম্পদ গড়ার ক্ষেত্রে দেখিয়েছেন ভেলকিবাজি। নিজের আয়কর ফাইল ‘ক্লিন’ রাখতে কৌশল হিসাবে সব সম্পদ করেছেন দুই পক্ষের স্ত্রী-সন্তান, ভাই ও স্বজনদের নামে। 

প্রথম পক্ষের ছেলে তৌফিকুর রহমান অর্ণব যখন শিক্ষার্থী তখনই তার নামে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। আটটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অর্ণবের বর্তমান সম্পদের পরিমাণ শতকোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তবে তার আয়কর ফাইলে সম্পত্তির পরিমাণ মাত্র ২৭ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে আয়কর ফাইলে আয় দেখিয়েছেন ৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।

এদিকে মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিভলীও সম্পদে পিছিয়ে নেই। হঠাৎ করেই গৃহিণী থেকে ব্যবসায়ী বনে যান তিনি। ১৯৯০-৯১ অর্থবছরে ট্রেডিং ব্যবসায় ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা বিনিয়োগ দেখিয়ে প্রথম আয়কর ফাইল খোলেন। কিন্তু এই টাকার উৎস উল্লেখ নেই। ২০১৩-১৪ সাল থেকে গৃহসম্পত্তি হিসাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ দেখানো শুরু করেন ফাইলে। বর্তমানে প্রায় ৩৮ কোটি টাকার সম্পদের মালিক শাম্মীর হাতে ও ব্যাংকে নগদ আছে প্রায় ২৭ কোটি টাকা। তবে প্রকৃতপক্ষে শিভলীর সম্পদও প্রায় শতকোটি টাকার। অর্ণব ও শিভলীর আয়কর ফাইল বিশ্লেষণ ও বাস্তবে দুজনের সম্পত্তির খোঁজ নিয়ে উল্লিখিত তথ্য পাওয়া গেছে। অন্যদিকে বিনা ছুটিতে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকায় চাকরি থেকে বরখাস্ত হতে পারেন মতিউর রহমান। এনবিআরের সদস্য পদ থেকে সরিয়ে সংযুক্তির পর আইআরডিতে যোগ দেননি। এমনকি তিনি ছুটির আবেদনও করেননি। দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, মতিউর রহমান নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখতে স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনদের নামে সম্পদ করেছেন। কিন্তু তাদের সম্পদের উৎস খুঁজতে গেলেই মতিউর ফেঁসে যাবেন। এক্ষেত্রে নিজের অবৈধ সম্পদ বৈধ করার জন্য অন্যের নামে স্থানান্তর-রূপান্তর মাধ্যমে ভোগদখলে রাখার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা যাবে। সাবেক সংসদ-সদস্য শহিদুল ইসলাম পাপুল তার আত্মীয়স্বজনের নামে ১৩৪ কোটি টাকার সম্পদ করেছেন। কিন্তু স্বজনদের সম্পদের উৎস খুঁজতে গিয়ে পাপুলের নাম জড়িয়ে যায়। একইভাবে মতিউর রহমানের স্ত্রী-সন্তানের সম্পদের উৎস খুঁজলেই মতিউরের পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

শেয়ার করুন