এমটিএফই অ্যাপ ব্যবহার করে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে রাজশাহীতে দায়ের হওয়া মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই বললেই চলে। এক মাসেই ওই মামলায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
এদিকে, গত বুধবার অ্যাপটি বন্ধ হয়ে গেছে। ওই অ্যাপের মাধ্যমে যাঁরা বিনিয়োগ করেছিলেন, তাঁরা আর কোনো টাকা ওঠাতে পারছেন না।
মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ গ্রুপ (এমটিএফই) দুবাইভিত্তিক একটি অনলাইন প্রতিষ্ঠান। এটি অনলাইনে ডেসটিনির মতো এমএলএম ব্যবসা শুরু করেছিল। সারা দেশে এই প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ও সিইও নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
এমটিএফই অ্যাপে বিনিয়োগ নিয়ে পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে ২৩ জুলাই আইনজীবী জহুরুল ইসলাম রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন। এতে ‘এমটিএফই’ ছাড়াও ‘আলটিমা উইলেট’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণার কথা উল্লেখ করা হয়। আদালতের বিচারক জিয়াউর রহমান আরজিটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করার জন্য নগরের রাজপাড়া থানার ওসি তদন্তের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনটি সংস্থার তিনজন কর্মকর্তাকে যৌথভাবে এই মামলা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পর দিন মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয়।
রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর ইসলাম, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপপরিদর্শক মোস্তাফিন ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপপরিদর্শক শিমুল যৌথভাবে মামলাটি তদন্ত করছেন।
এ বিষয়ে রাজপাড়া থানার ওসি রফিকুল হক বলেন, তদন্ত চলছে। যতটুকু জানা গেছে, কয়েকটি লেভেলে প্রতারণা হয়েছে। রাজশাহীতে যাঁরা জড়িত, তাঁরা প্রকৃতপক্ষে একজন আরেকজনের দ্বারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ পর্যন্ত এই মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।’
ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করা হয়েছে। তবে আরজিতে কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। এর মধ্যে রাজপাড়া থানা এলাকার সবুজ নামের এক যুবকের নাম রয়েছে। তিনি নগরের লক্ষ্মীপুর এলাকায় এমটিএফই অ্যাপের কার্যালয় খুলেছিলেন।
ইকবাল হোসেন নামের একজন ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, সবুজের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে তিনি ১৪ লাখ টাকা এই অ্যাপে বিনিয়োগ করেছিলেন। তিনি মাসখানেক আগে বিনিয়োগ করেন। তাঁদের বলা হয়েছিল এই অ্যাপে আড়াই লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে প্রতিদিন ৪৮ ডলার করে মুনাফা পাওয়া যাবে। প্রথম দিকে অ্যাকাউন্টে ডলার জমা হয়েছে। তিনি ৫০ হাজার টাকা তুলতে পেরেছেন।
ইকবাল হোসেন আরও বলেন, বুধবার থেকে ওই অ্যাপ আর কোনো কাজ করছে না। সবুজ ছিলেন কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। তাঁর বাবাও ছিলেন সিইও। তাঁরা সবাই পলাতক। অ্যাপ বন্ধ হওয়ার পরে গত শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ভুক্তভোগী লোকজন তাঁদের বাড়ি ঘেরাও করেছিলেন। তাঁরা কেউ বাড়িতে ছিলেন না।
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার আবদুর রহমান বলেন, তিনি ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। অ্যাপ বন্ধ হওয়ার আগেই টাকা তুলে নিয়েছেন। তবে অনেকেই টাকা বিনিয়োগ করে টাকা খুইয়েছেন। তাঁর হিসাবে বাগমারা থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছেন।