বাংলাদেশি ওমরাহ পালনকারীদের জন্য ‘নুসুক’ প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে সৌদি আরব। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই উদ্যোগের সূচনা করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার সৌদি গণমাধ্যম আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ বৃহত্তম রাষ্ট্র। এ দেশের ১৫ কোটিরও বেশি মানুষ মুসলিম ধর্মাবলম্বী। প্রতিবছর কয়েক লাখ লোক বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে যান হজ ও ওমরাহ পালনের জন্য।
নুসুক হলো এমন একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম—যেখানে ই-ভিসা আবেদন, ভ্রমণ পরিকল্পনা এবং বুকিংয়ের ক্ষেত্রে সহযোগিতা পাওয়া যাবে। এর মাধ্যমে ভ্রমণকারীরা মক্কা, মদিনা এবং অন্যান্য শহরে ভ্রমণের জন্য যাত্রাপথ নির্দিষ্ট করতে পারবেন। হজ ও ওমরাহ পালনকারীদের সফর ত্রুটিমুক্তভাবে সম্পন্ন করাই নুসুক পরিষেবার লক্ষ্য।
নুসুকের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে ভ্রমণকারীরা খুব সহজেই সৌদিতে তাঁদের ভ্রমণ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে পারবেন। এর মাধ্যমেই ই-ভিসায় আবেদন করা, হোটেল বুক করা এবং ফ্লাইট বুক করার মতো সুবিধা পাওয়া যাবে।
এ ছাড়া ওয়েবসাইটটি ওমরাহ বা হজযাত্রীদের জন্য বিভিন্ন বিষয়ের বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়—আবাসন, ল্যান্ডমার্ক এবং পবিত্র এলাকাগুলো ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভ্রমণকারীরা চাইলে সেগুলো তালিকায় যুক্ত করতে পারবেন।
বুকিং প্রক্রিয়া সহজ করতে সুনির্দিষ্ট ম্যাপ ছাড়াও শহরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের পরিবহন-সম্পর্কিত তথ্য ও সেবা পাওয়া যাবে নুসুক থেকেই।
প্রতিবেদনে বলা বলা হয়েছে, সৌদি পর্যটন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এবং দেশটির হজ ও ওমরাহমন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহ প্রথমবারের মতো ঢাকা সফর করে নুসুক প্ল্যাটফর্মটি বাংলাদেশিদের জন্য উন্মুক্ত করেছেন।
ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নুসুক চালুর অনুষ্ঠানে হজমন্ত্রী আল-রাবিয়াহ বলেন, ‘এটা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব এবং হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের আধ্যাত্মিক যাত্রাকে নিরাপদ, সহজ ও ঝামেলামুক্ত করতে সম্ভাব্য সবকিছু করার জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আপনাদের তীর্থযাত্রার অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করতে আমরা ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা আপনাকে মক্কায় স্বাগত জানাই। মদিনায় স্বাগত জানাই। সৌদি আরবে স্বাগত জানাই। আপনি যেকোনো সময় আসতে পারেন। আপনাকে সব সময় স্বাগতম।’
এ বিষয়ে নুসুকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফাহদ হামিদাদ্দিন জানান, সৌদি ভিশন-২০৩০-এর অধীনে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বাজার। চলতি বছরই বাংলাদেশ থেকে ৩ লাখ ৩২ হাজার মানুষ সৌদি আরবে ভ্রমণ করেছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ওমরাহ পালনকারীরা যেন সৌদি আরবে আরও বেশি দিন কাটাতে পারেন, সে জন্য একটি নীতি চালু করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এ অনুযায়ী, ওমরাহ ভিসার মেয়াদ ৩০ থেকে ৯০ দিন করা হয়েছে।