২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৩:১০:২৫ পূর্বাহ্ন
এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের শক্তি ও দুর্বলতা যেসব জায়গায়
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৮-২০২৩
এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের শক্তি ও দুর্বলতা যেসব জায়গায়

এশিয়া কাপ খেলার জন্য বাংলাদেশের ১৭ সদস্যের দল শ্রীলঙ্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করছে রোববার ২৭শে অগাস্ট। ত্রিশে অগাস্ট থেকে শুরু হয়ে শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানে ছয় দলের এই টুর্নামেন্ট চলবে সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখ পর্যন্ত।


এশিয়া কাপের দল ঘোষণার পর থেকেই বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ের টপ অর্ডারের ফর্মের বাইরে থাকা আর অনভিজ্ঞ লোয়ার মিডল অর্ডার নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছিল।


শ্রীলঙ্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কয়েকদিন আগে ফর্মে থাকা পেসার এবাদত হোসেন ইনজুরিতে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ায় এখন দলের পেস অ্যাটাকের গভীরতাতেও ঘাটতি তৈরি হয়েছে।


এশিয়া কাপে বাংলাদেশের গ্রুপে থাকা অন্য দুই দল শ্রীলঙ্কা এবং আফগানিস্তান। এই গ্রুপ থেকে সেরা দুই দল উঠবে সুপার ফোর রাউন্ডে। সুপার ফোরের সেরা দুই দল খেলবে ফাইনালে।


বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ হবে ৩১শে অগাস্ট স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এরপরের ম্যাচটি হবে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে, পাকিস্তানের লাহোরে তেসরা সেপ্টেম্বর।


দুর্বলতার জায়গা যেগুলো

টুর্নামেন্টের আগে নানা নাটকীয়তার পর বাংলাদেশের সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক ও অভিজ্ঞ ওপেনিং ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল টুর্নামেন্ট থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর সাকিব আল হাসানকে অধিনায়ক ঘোষণা করা হয়।


টুর্নামেন্ট পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আল হাসান বলেছেন, এই টুর্নামেন্টে অভিজ্ঞ তামিম ইকবালের না থাকা বাংলাদেশ দলের জন্য ক্ষতি।


তিনি বলেন, “যে কোনো অভিজ্ঞ খেলোয়াড় দলের কন্ডিশন বা বড় টুর্নামেন্ট খেলার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে নতুন খেলোয়াড়দের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।”


দল ঘোষণার সময় প্রধান নির্বাচক বলেছিলেন এশিয়া কাপের দল ঘোষণা হয়েছে ‘অধিনায়কের পছন্দ ও কোচের চাহিদা অনুযায়ী’।


তবে এই মূহুর্তে ওপেনার, খেলোয়াড়দের সামর্থ্য আর ফর্ম নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে বাংলাদেশের।


ওপেনিংয়ে তামিমের জায়গায় লিটন দাসের সাথে দেখা যেতে পারে নাইম শেখকে। এই দুই ওপেনিং ব্যাটসম্যানের ফর্মও চিন্তায় ফেলছে বাংলাদেশ সমর্থকদের।


দল ঘোষণা করার সময় নির্বাচকরা বলেছিলেন নাইম শেখকে তার আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার জন্য দলে রাখা হয়েছে।


যদিও মাত্র চারটি ওয়ানডে খেলা নাইম শেখের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা মূলত টি টোয়েন্টিতে। সেখানেও ২৪ গড় আর ১০৩ স্ট্রাইক রেটে তার পারফরমেন্স যথেষ্ট গড়পরতাই বলতে হবে।


আরেক ওপেনার লিটন দাসের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন না থাকলেও তার সাম্প্রতিক ফর্ম চিন্তায় ফেলার মতই। সংবাদ সম্মেলনে কোচের কাছে লিটনের ফর্ম নিয়ে প্রশ্নও তোলেন সাংবাদিকরা।


কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন, “লিটন ইনিংস ভালোভাবে শুরু করে সেটিকে বড় করতে পারছে না। সে নিজেও এই সমস্যা জানে। তাই সে নিজেই এর সমাধান বের করবে বলে আমার বিশ্বাস।”


এছাড়া রয়েছে দলের ব্যাটিংয়ের লোয়ার মিডল অর্ডারে পরীক্ষিত পারফর্মার না থাকার বিষয়টি।


শামীম পাটোয়ারী, আফিফ হোসেন, মেহেদি মিরাজ, মাহেদি হাসানরা ব্যাটিংয়ের সাত নম্বরে খেলতে পারেন।


কিন্তু একমাত্র মেহেদি মিরাজ বাদে অন্য কারো পরিসংখ্যান বা সাম্প্রতিক পারফরমেন্সই তেমন আশা জাগানিয়া নয়।


আর বোলিংয়ে ধারাবাহিক ফর্মে থাকা এবাদত হোসেনের সার্ভিস যে দল মিস করবে সেটি সংবাদ সম্মেলনে অকপটে স্বীকার করেন কোচ এবং ক্যাপ্টেন দু’জনেই।


দলের শক্তি যেখানে

বাংলাদেশ দলের মূল শক্তি সবসময়ই ছিল স্পিন বোলিং আর মিডল অর্ডার ব্যাটিং। এবারও এই দুই জায়গাকেই সবচেয়ে বড় শক্তি মনে করা হচ্ছে।


ব্যাটিংয়ে ফর্মে থেকে নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়রা বেশ কিছুদিন ধরেই ধারাবাহিক ভাবে পারফর্ম করে আসছেন।


এছাড়া সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহিম শুধু অভিজ্ঞতার হিসেবেই নয়, পারফরম্যান্সের দিক থেকেও নিশ্চিতভাবে দলের সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা।


পাশাপাশি সাকিব এবং হৃদয় কিছুদিন আগেই শ্রীলঙ্কায় টি টোয়েন্টি লিগ খেলে এসেছেন, যার ফলে তাদের কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতেও খুব বেশি সমস্যা হওয়ার কথা না।


সংবাদ সম্মেলনে সাকিব নিজেও বলেছেন, “যে কন্ডিশন দেখে আসলাম কিছুদিন আগে, তার সাথে খুব বেশি পার্থক্য হবে না। আর যেহেতু আমরা তিন চারদিন আগে যাচ্ছি, আমার মনে হয় খুব বেশি কঠিন হবে না মানিয়ে নিতে।”


স্পিন বোলিং ডিপার্টমেন্টে সাকিব আর মিরাজের সাথে থাকছেন অপেক্ষাকৃত অনভিজ্ঞ নাসুম আহমেদ।


তাইজুলের পরিবর্তে নাসুমকে দলে নেয়ার কারণ হিসেবে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন মন্তব্য করেছিলেন যে, নাসুম কিছুটা ‘ডিফেন্সিভ’, যেটা এশিয়া কাপে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।


স্পিন ছাড়া দলের পেসাররাও সাম্প্রতিক সময়ে যথেষ্ট ধারাবাহিক পারফর্ম করেছেন। তাসকিন আহমেদ এবং হাসান মাহমুদের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বেশ ভালো বলা চলে।


শেয়ার করুন