২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৩:৪১:৪৪ অপরাহ্ন
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতীয় রেল চললে লাভ কতটুকু
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৬-২০২৪
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতীয় রেল চললে লাভ কতটুকু

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বর্তমানে চলাচল করছে আন্তঃদেশীয় ট্রেন। মৈত্রী, বন্ধন মিতালী এক্সপ্রেসের পরে দীর্ঘ ৭৭ বছর পর রাজশাহী ও কলকাতার মধ্যে পুনরায় ট্রেন সার্ভিস চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।


যেটি হবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচলকারী চতুর্থ আন্তঃদেশীয় ট্রেন।

একইসঙ্গে বাংলাদেশের রেলপথ করিডোর হিসেবে ব্যবহার করে ভারতীয় রেল ১২টি রুট দিয়ে চলাচল করবে।


বাংলাদেশ ও ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষের আশা, এরমধ্যে দিয়ে দুদেশই অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। আর বাংলাদেশও পেতে যাচ্ছে ভারতের ভূমি ব্যবহার করে নেপালে রেল সংযোগের মাধ্যমে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের সুযোগ।


উপমহাদেশ বিভক্ত হওয়ার আগে উপনিবেশিক ব্রিটিশদের হাত ধরে গড়ে ওঠে ভারতীয় রেলওয়ে। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান পৃথক রাষ্ট্র গঠনের পর ভারতীয় রেলওয়ে ও পাকিস্তান রেলওয়ে নামে বিভক্ত হয়ে যায়। এরপর পাকিস্তান রেলওয়ের পূর্বাংশ নিয়েই ১৯৭২ সালে গঠিত হয় বাংলাদেশ রেলওয়ে।


বিভাজনপূর্ব ভারতীয় রেলওয়ের অধীনে এমন অনেকগুলো রুট ছিল সেগুলো ভারত বিভক্ত হওয়ার কারণে ১৯৪৭ সালে বন্ধ হয়ে যায়। যদিও ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগ পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে বেশ কিছু রুটে ট্রেন চলাচল অব্যাহত ছিল।


এর দীর্ঘ সময় পর ২০০৮ সালের ১৪ই এপ্রিল ঢাকা-কলকাতা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস নামক ট্রেনের মাধ্যমে সরাসরি রেল যোগাযোগ পুনঃস্থাপিত হয়। দ্বিতীয় রুট হিসেবে ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর খুলনা-কলকাতা রুটে বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হয়। আর ২০২১ সালের ২৬ মার্চ তৃতীয় ট্রেন হিসেবে মিতালী এক্সপ্রেস ঢাকা-শিলিগুড়ি রুটে চলাচল শুরু করে।


এ বিষয়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘আমাদের যে ইঞ্জিন আছে তা দিয়ে আমরা সপ্তাহে একটা-দুটো ট্রেন সপ্তাহের দুইদিন বা তিনদিন চালাব। আমাদের ব্রডগেড কোচ স্বল্পতা আছে। এখন ভারতের রেলওয়ের সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি, যদি তাদের ব্রডগেজ কোচ এনে সংযোজন করা যায়। রাজশাহী থেকে দর্শনার যে দূরত্ব.. দর্শনা থেকে গেদে বা কলকাতার দূরত্ব কম। এখানে রাজস্ব আয় আমরা বেশি পাব। ’


ভারত-বাংলাদেশ রেল করিডোর নিয়ে নয়া চুক্তি

চলতি মাসের ২২ জুন দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৩টি ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার এক নম্বর রয়েছে রাজশাহী ও কলকাতার মধ্যে নতুন ট্রেন সার্ভিস চালুকরণ, ভারতীয় রেল করিডোর নিয়ে নয়া চুক্তি।


এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৭৭ বছর পর রাজশাহী ও কলকাতার মধ্যে পুনরায় ট্রেন সার্ভিস চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়। যেটি হবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচলকারী চতুর্থ আন্তঃদেশীয় ট্রেন।


এছাড়া এই চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে ভারতের কলকাতা থেকে ‘সেভেন সিস্টার্স’-খ্যাত সাত রাজ্যের ১২টি রুটে পণ্য ও যাত্রী চলাচলের সুবিধা।


এ বিষয়ে ভারতীয় রেলওয়ের বক্তব্য নিয়ে বিস্তারিত নিউজ করেছে ভারতীয় প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য টেলিগ্রাম। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন পরিকল্পনার আওতায় মোট এক হাজার ২৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের ১৪টি সেকশন থাকবে। এর মধ্যে বাংলাদেশের ভেতরে থাকবে ৮৬১ কিলোমিটার। আর নেপালে ২০২ কিলোমিটার ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে থাকবে ২১২ কিলোমিটার পথ।


পত্রিকাটি বলছে, বাংলাদেশ সরকার দেশের ভেতরে ভারতকে রেলপথ স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নয়াদিল্লির পরিকল্পনা সহজ হয়েছে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে মোট ৮৬১ কিলোমিটার, নেপালে ২০২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার এবং উত্তরবঙ্গ ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২১২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জরিপ চালানো হবে।


শেয়ার করুন