বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে আবুল হাশেম সরদার নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা মাথায় ১০ লিটার দুধ ঢেলে গোসল করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। দলে মূল্যায়ন না পেয়ে এই কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার দুপুরে শরীয়তপুর শহরের ধানুকায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার এ কে এম নাসিরউদ্দিন কালুর বাসভবনে এ ঘটনা ঘটে। আবুল হাশেম সরদার শরীয়তপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হুগলি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন।
পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম জাহাঙ্গীর মৃধা বলেন, ‘আবুল হাশেম সরদার কখনোই আওয়ামী লীগের কোনো নেতা ছিলেন না। তাকে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রোগ্রামে দেখা যেত। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কোথাও কোন নাম নেই তার।’
শরীয়তপুর পৌর যুবলীগের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আবুল হাশেম সরদার কখনোই যুবলীগ করেননি। তার যুবলীগের কোনো পদ আছে এমনটি আমার জানা নেই। তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে তাকে দেখা যেত।’
আবুল হাশেম সরদার বলেন, ‘আগে আমি এক সময় ঢাকায় থাকতাম। আওয়ামী লীগের সঙ্গে অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মূল্যায়ন পাইনি। পরে এক সময় শরীয়তপুর ফিরে আসি। এখানে রাজনীতি করতে শুরু করি। আমাকে যুবলীগ নেতাও বানানো হয়েছিল। পরে আমাকে শরীয়তপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি করেছে। তবে আমাকে যে কমিটিতে রাখা হয়েছে সে কমিটির কোনো অনুমোদন নেই।
তিনি বলেন, আমি বারবার গিয়েও নেতাদের কাছে কোনো মূল্যায়ন পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে দল ছেড়ে বিএনপিতে যোগদান করেছি। দুধ দিয়ে গোসল করেছি, আগামী দিনগুলোতে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের দল বিএনপির রাজনীতি করব।’
শরীয়তপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন ঢালী মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আবুল হাশেম সরদার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দল করেন। তবে সে আওয়ামী লীগের মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নিতেন। তাকে অনেকদিন ধরেই বিএনপি নেতাদের সঙ্গে উঠবস করতে দেখছি। শুনলাম সে মাথায় দুধ ঢেলে আওয়ামী লীগ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে সে কখনোই আওয়ামী লীগের কোনো পদে ছিলেন না।’
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘আবুল হাশেম মিছিল-মিটিংয়ে স্লোগান দিতেন। দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকতেন। সে তার সমস্যার কথা জানানোর পরে শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তাও পেয়েছেন।’
আবুল হাশেম সরদার সম্পর্কে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার এ কে এম নাসির উদ্দিন কালু বলেন, ‘আবুল হাশেম সরদার আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন। সে আমার বাড়ির কাছের হলেও কখনোই সে বিএনপি করেনি। তাকে বেশিরভাগ সময়ই শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপুর প্রোগ্রামে দেখা যেত। কেন বা কী কারণে সে আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগদান করেছে সেটা সে নিজেই জানে। বিএনপিতে যোগদানকালে আমি উপস্থিত ছিলাম। আমরা তাকে বরণ করে নিয়েছি।’ৃ