বহুল কাঙ্ক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ উদ্বোধন হবে ৯ সেপ্টেম্বর। ওই দিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভার্চুয়ালি রেলপথটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গতকাল দুপুরে প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি প্রতিনিধি দল। এর নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. ইয়াছিন।
এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) শহীদুল ইসলাম, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন, আখাউড়া-লাকসাম ডুয়াল গেজ ডাবল লাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীনসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের প্রারম্ভিক স্টেশন আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্র্যাক কারে করে ভারত সীমান্তবর্তী শিবনগর পর্যন্ত ঘুরে দেখেন।
পরিদর্শন শেষে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক আবু জাফর মিয়া বলেন, ‘প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। শিগগিরই উদ্বোধন হবে। কিছু কাজ যেগুলো বাকি আছে তা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই শেষ হবে। রেলপথটি দিয়ে প্রথমে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে। এর মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য আরো বাড়বে।’
১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আখাউড়া-আগরতলা ডুয়াল গেজ রেলপথের বাংলাদেশ অংশে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। পুরো অংশেই বসানো হয়েছে রেললাইন। তবে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবন এবং স্টেশনের প্লাটফর্মের কাজ এখনো শেষ হয়নি।
প্রকল্পের প্রস্তাবনায় রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারসহ পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলে রেল পরিবহনে আন্তঃযোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ভারতের সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার এবং রফতানিনির্ভর ক্ষুদ্র শিল্পের প্রসার ঘটবে। তাছাড়া আখাউড়া হয়ে ভারতের কলকাতা ও আগরতলার মধ্যে নতুন রেল যোগাযোগ স্থাপনে ভূমিকা রাখবে প্রকল্পটি। রেল সংযোগটি এরই মধ্যে ঘোষণা করা ১৬টি ট্রানজিট রুটের অংশ। এটি চালু হলে আগরতলা এবং কলকাতার দূরত্ব প্রায় ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার কমবে। পাশাপাশি ভ্রমণের সময় ৩১ ঘণ্টা থেকে কমে ১০ ঘণ্টা হবে; যা দেশটির বাণিজ্য, পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সুযোগ উন্মুক্ত করবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ চালুর ফলে সড়ক পথের পর রেলপথেও চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পাবেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। এটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোয় বাণিজ্য বাড়াতে সাহায্য এবং পণ্যের দ্রুত এবং সাশ্রয়ী পরিবহন সহজতর করবে। তবে এখন পর্যন্ত ভারত থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে কোন ধরনের পণ্য আসবে বা তা ট্রেনে পরিবহন করে আখাউড়া নিয়ে যাওয়া হবে কিনা, সেটি এখনো নির্দিষ্ট করা হয়নি।