কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বসতভিটার গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে বড় ভাইকে হত্যার মামলায় চার ভাই ও এক বোনসহ সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক ফাতেমা জাহান স্বর্ণা এ রায় দেন।
এ ছাড়াও সাজাপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী আইনজীবী (এপিপি) দিলিপ কুমার ঘোষ।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন—পাকুন্দিয়া উপজেলার সুখিয়া ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের মৃত মতিউর রহমানের ছেলে নজরুল মিয়া (৪৫), খোকন মিয়া (৪৭), সাত্তার মিয়া (৪২) ও বকুল মিয়া (৪৪) ও মেয়ে চম্পা আক্তার (৪২), নজরুল মিয়ার স্ত্রী রহিমা খাতুন (৩২) এবং মো. সৈয়দ (৫৭)। রায় ঘোষণার সময় নজরুল মিয়া ছাড়া বাকি ছয়জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৬ সালের ২৩ নভেম্বর সকালে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন রিটন মিয়া (৫০)। তিনিও মতিউর রহমানের বড় ছেলে। রিটন পেশায় একজন বাসচালক ছিলেন।
আদালত ও মামলার বিবরণী সূত্রে জানা যায়, খলিশাখালী গ্রামের মৃত মতিউর রহমানের পাঁচ ছেলে রিটন মিয়া, বকুল মিয়া, সাত্তার মিয়া, খোকন মিয়া ও নজরুল মিয়ার মধ্যে রিটন মিয়া একা গ্রামের পৈতৃক বাড়িতে বসবাস করতেন। অন্য চার ভাই কাজের জন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বসবাস করতেন। ২০১৬ সালের ২৩ নভেম্বর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দিন তারা বাড়িতে আসেন। বাড়ির একটি গাছ কাটা নিয়ে ছোট ভাইদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় রিটন মিয়ার।
এর জের ধরে রিটন মিয়াকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে গুরুতর আহত করলে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সালমা আক্তার বাদী হয়ে নিহতের চার ভাই বকুল মিয়া, সাত্তার মিয়া, খোকন মিয়া ও নজরুল মিয়া এবং এক বোন চম্পাসহ মোট সাতজনকে আসামি করে পাকুন্দিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাকুন্দিয়া থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সারোয়ার জাহান সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।