কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহতের ঘটনায় বাহিনীটির অজ্ঞাত সদস্যদের আসামি করে রৌমারী থানায় মামলা করা হয়েছে।
সোমবার নিহত যুবক মানিক মিয়ার (৩০) বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি রূপ কুমার সরকার। গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বেহুলারচর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক মানিক মিয়া নিহত হন। তিনি বেহুলারচর গ্রামের আব্দুল বাতেনের ছেলে।
এলাকাবাসী জানান, মানিক মিয়া তার কয়েকজন সহযোগীসহ সীমান্তে গরু চোরাকারবারের জন্য গিয়েছিলেন। পরে বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। আইনি জটিলতা এড়াতে মানিকের সহযোগী ও পরিবারের সদস্যরা লাশ নিয়ে সটকে পড়েন। পরদিন দুপুরে পার্শ্ববর্তী বন্দবের ইউনিয়নের বাঞ্চারচর গ্রামে মানিকের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে, মামলার এজাহারের বরাতে ওসি রূপ কুমার সরকার জানান, বাদী উল্লেখ করেছেন, তাদের বাড়ির একটি গরু হারিয়ে যায়। মানিক শনিবার গভীর রাতে তাদের বাড়ি থেকে ৩০০ গজ পূর্বে সীমান্তের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সেই গরু খুঁজতে গিয়েছিলেন। এ সময় বিএসএফ সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
ওসি বলেন, অজ্ঞাত বিএসএফ সদস্যদের আসামি করে নিহতের বাবা মামলা করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। আইনজীবীরা বলছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সংঘটিত ঘটনার ক্ষেত্রে দেশে মামলা হতে পারে। তবে ঘটনা যদি অন্য রাষ্ট্রের সীমানায় সংঘটিত হয় তাহলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বৈধ কাগজপত্রের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রে গিয়ে তাদের থানায় মামলা করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে এটি তদন্ত সাপেক্ষ বিষয় যে ঘটনা কোথায় এবং কার দ্বারা সংঘটিত হয়েছে।
এদিকে, সীমান্তে গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহতের ঘটনায় সোমবার বিকালে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়েছে। এ সময় গুলি করার কথা স্বীকার করেছে বিএসএফ। তবে বৈঠকে বিএসএফ দাবি করেছে, মানিক মিয়া ও তার সহযোগীরা ভারতীয় সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছিল।
রৌমারী সীমান্তের দায়িত্বে থাকা জামালপুর বিজিবি-৩৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ আল মাশরুকী বলেন, ‘পতাকা বৈঠকে বিএসএফ জানিয়েছে, তাদের সীমানায় সন্দেহভাজনদের অনুপ্রবেশের কারণে তারা গুলি ছুড়েছে। গুলির ঘটনায় আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি।’