২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৭:০৩:১০ পূর্বাহ্ন
এক ইউনিয়নে আ.লীগের তিন সভাপতি তিন সম্পাদক!
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৯-২০২৩
এক ইউনিয়নে আ.লীগের তিন সভাপতি তিন সম্পাদক!

এক ইউনিয়নে এতদিন একজন সভাপতি ও একজন সাধারণ সম্পাদক থাকলেও এবার এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে তিনজন সভাপতি ও তিনজন সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। নজিরবিহীন এ ধরনের কমিটি গঠন করা হয়েছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নে।


আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে একই উপজেলা, পৌরসভা বা ইউনিয়নে দুই-তিনটি করে কমিটি গঠনের কোনো বিধান না থাকলেও রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী এমন কাজ করেছেন।


এ প্রসঙ্গে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেছেন, এসব করা পাগলামি ছাড়া আর কিছু নয়। একই ইউনিয়নে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তিন কমিটি কিভাবে হয় তা তিনি জানেন না।


দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ সেপ্টেম্বর গোদাগাড়ীর মাটিকাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল ডেকে ওমর ফারুক চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে মঞ্চ থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তিনটি কমিটি ঘোষণা করেন। এ সম্মেলনে গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অয়েজুদ্দিন বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ উপস্থিত ছিলেন। তবে নিয়মানুযায়ী জেলা আওয়ামী লীগের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।


জানা গেছে, গোদাগাড়ীর মাটিকাটা ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি করা হয়েছে মইদুল ইসলাম আপেল হাজিকে। এই তিন ওয়ার্ডে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে রুহুল আমিন নয়ন মেম্বারকে। ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাবিয়ার রহমান মাস্টার সাবুকে সভাপতি ও নুরুজ্জামান নুরুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। শেষে ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে নাসির উদ্দিন নয়নকে সভাপতি ও খুরশেদ আলি মেম্বারকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।


দলীয় নেতাকর্মীরা আরও জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর মাটিকাটা ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ডাকা হয়েছিল। কিন্তু ওই দিন জনসমাবেশ আশানুরূপ না হওয়ায় কমিটি ঘোষণা পিছিয়ে একদিন পর ৮ সেপ্টেম্বর আবারো সম্মেলন ডাকা হয়। এ সম্মেলন থেকে একই ইউনিয়ন কমিটি ভেঙে তিনটি কমিটি ঘোষণা করা হয়।


একই ইউনিয়নে তিন সভাপতি ও তিন সম্পাদক করা প্রসঙ্গে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বলেন, একই ইউনিয়নে তিন সভাপতি ও তিন সম্পাদক হতে পারলে একই উপজেলায় বা আসনে একাধিক এমপি হলে দোষ কী? এসব এমপি ফারুকের চরম স্বেচ্ছাচারিতা ছাড়া কিছু নয়। ভোটের আগে মাঠ গরম করতে তিনি এসব করছেন। শুনেছি ফারুক একই ইউনিয়নে দুটি তিনটি করে দলীয় কমিটি করেছেন।


দলের গঠনতন্ত্রে না থাকলেও একই ইউনিয়নে তিন সভাপতি ও তিন সাধারণ সম্পাদক করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অয়েজুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এমপি সাহেব কমিটি করেছেন।


বিষয়টি সম্পর্কে জানতে রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন না ধরায় তার মতামত পাওয়া সম্ভব হয়নি।


উল্লেখ্য, শুধু গোদাগাড়ীর মাটিকাটা ইউনিয়নই নয়- রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ৪ পৌরসভায় এমপি ফারুক ইতোমধ্যে কোথাও দুটি আবার কোথাও তিনটি করে মনগড়া কমিটি গঠন করেছেন। এমনকি একই মঞ্চ থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ ও কৃষক লীগসহ সহযোগী সংগঠনের ছয়-সাতটি করে কমিটি ঘোষণা করেছেন।


উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই গোদাগাড়ীর আফজি স্কুল মাঠে কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধের জেরে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা মঞ্চ ও প্যান্ডেলে ব্যাপক ভাংচুর করেন। ওই সময় এমপি ফারুক চৌধুরীকে ধাওয়া দিলে তিনি স্থানীয় পৌর কার্যালয়ে ঢুকে আত্মরক্ষা করেন। সূত্র-যুগান্তর

শেয়ার করুন