২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১০:২৪:০০ অপরাহ্ন
ভাসানচরে তৈরি হচ্ছে নতুন পর্যটনকেন্দ্র
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৯-২০২৩
ভাসানচরে তৈরি হচ্ছে নতুন পর্যটনকেন্দ্র

নতুন সমৃদ্ধি নিয়ে উড়িরচরের মতো অসংখ্য চর ও দ্বীপ নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে ভাসানচর। কক্সবাজার থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সাগরের মধ্যে জেগে উঠছে সুন্দরবনের আদলে নতুন ভূমি। সেখানে তৈরি হচ্ছে নতুন পর্যটনকেন্দ্র। বাংলাদেশ ভূখণ্ডের পূর্বাঞ্চলের ভবিষ্যৎ রক্ষা করবে এই বন। কক্সবাজার থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে সাগরের মাঝে জেগে উঠছে সুন্দরবনের আদলে নতুন ভূমি। যেখানে তৈরি হবে নতুন শিল্প ও পর্যটনকেন্দ্র। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে ওই এলাকার গ্রামীণ আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে। অর্থনৈতিকভাবে প্রচুর লাভবান হবে দেশ। সূত্র জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ সাগরে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথা বলছেন পরিবেশবাদীরা। এমন প্রেক্ষাপটে বঙ্গোপসাগরের বুকে অথই নীল জলরাশির মাঝে জেগে উঠছে মাইলের পর মাইল ভূখণ্ড।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তিন দশক আগেও বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশির অংশ ছিল নোয়াখালীর চরঙ্গুলিয়া। সেটি এখন সমৃদ্ধ একটি গ্রাম। ১০০ বছর ধরে পদ্মা, মেঘনা আর ব্রহ্মপুত্রের বয়ে আনা কোটি কোটি টন পলি যোগ হচ্ছে এই ভূখণ্ডে। ২০১৬ সাল থেকে প্রতি বছর গড়ে বাংলাদেশে যুক্ত হচ্ছিল ১৬ বর্গকিলোমিটার ভূমি। ২০২১ সালে এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ বর্গকিলোমিটারে। যদিও প্রতি বছর প্রায় ৩২ কিলোমিটার ভূমি নদীভাঙন আর সমুদ্রে হারিয়ে যাচ্ছে।


জানা গেছে, নোয়াখালী জেলার মূল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত হচ্ছে উড়িরচর। এই উদ্যোগ সফল করতে সমুদ্র থেকে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর ভূমি পুনরুদ্ধারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই ভূমি পুনরুদ্ধারের জন্য উড়িরচর-নোয়াখালীতে নির্মাণ করা হবে ক্রস ড্যাম। নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ ও সুবর্ণচর উপজেলায় সাত কিলোমিটারেরও বেশি লম্বা ক্রস ড্যাম ও টাই বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে উড়িরচরের সাথে নোয়াখালীর মূল ভূখণ্ডের স্থায়ী যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে। এ জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সুত্রমতে, ক্রস ড্যাম প্রকল্পের মাধ্যমে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা হবে ১০ হাজার হেক্টর ভূমি। এতে ব্যয় হচ্ছে ৫৮৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সহজ হবে যোগাযোগব্যবস্থা। ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাবে কৃষিজমি, বাড়বে ফসলের উৎপাদন। স্থানীয় পর্যায়ে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। ইতোমধ্যে এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। যেভাবে জনসংখ্যা বাড়ছে, তাতে দ্রুত কমে যাচ্ছে কৃষিজমি। শিল্পায়নে জমির স্বল্পতা ঘটছে, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সাগরের বুকে জেগে ওঠা এই ভূমি বাংলাদেশের জন্য এক নতুন সম্ভাবনা। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উড়িরচরের সাথে নোয়াখালীর মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হবে। কৃষিজমি ভাঙনের কবল থেকে রক্ষার মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বাড়বে। স্থানীয় পর্যায়ে খাদ্যনিরাপত্তা বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার দারিদ্র্য হ্রাস করা সম্ভব হবে। জানা গেছে, আগামী ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে চর আর দ্বীপগুলোর ভূমির মান উন্নত হবে। এতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে দেশ রক্ষা পাবে।


শেয়ার করুন