নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের ভাষণ দেওয়ার সময় জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মিরা। একই স্থানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীগ লীগ করেছেন শান্তি সমাবেশ। নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও সকল অঙ্গসংগঠন জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে শেখ হাসিনা ও বর্তমান সরকার বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মিরা নানা উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান এবং বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। দুপুর সোয়া ১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারন অধিবেশনে ভাষণ দেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাংলা সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।
একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মিরা বিএনপির ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশ প্রতিহতের ডাক দিয়ে একই মাঠের অপর প্রান্তে মুখোমুখি অবস্থান নিলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সফরসঙ্গী কয়েকজন মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তারা এ সময় সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাতিসংঘের ভেতর অবস্থান করছিলেন। জাতিসংঘ সদর দপ্তর সংলগ্ন এলাকায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শত শত নেতা-কর্মির সমাগম ঘটে। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে স্বৈরাচার, গণবিরোধী ও অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বলে শ্লোগান দিতে থাকেন।
এদিকে, বিএনপির বিক্ষোভের পাশাপাশি আওয়ামী লীগও শান্তি সমাবেশ করেছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে দেওয়া স্লোগান বিএনপির ব্যাপক স্লোগানের মুখে চাপা পড়ে যায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনির্বাচিত ও অবৈধ প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করে বিএনপি নেতারা শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে অরুচিকর শ্লোগান দেওয়া শুরু করলে আওয়ামীলীগের কর্মিরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি নেতারা বলেন, অগণতান্ত্রিক ও প্রহসনের নির্বাচনে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার কোনই অধিকার নেই। কারণ তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হননি।
যুক্তরাষ্ট্রের যেখানেই হাসিনা সেখানেই প্রতিরোধ আন্দোলন সর্বাত্মক ভাবেই সফল হয়েছে বলে জানান বিএনপি নেতারা। তারা বলেন, বিএনপির অসুস্থ চেয়ারপার্সনকে সুচিকিৎসার জন্য অবিলম্বে বিদেশে পাঠানোর দবি জানান। তারা বলেন, দেশের সাধারন মানুষকে খুন গুম আর ভয়াবহ আতংকের মধ্যে রেখে জাতিসংঘে এসে শান্তির কথা বলে বিশ্ববাসীর কাছে মিথ্যাচার করছে শেখ হাসিনা।
বক্তারা বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার অনির্বাচিত ও অগণতান্ত্রিক সরকার। তাঁরা দেশের বিরোধী দলের নেতাকর্মিদের উপর জেল-জুলুমসহ হত্যার রাজনীতি করছে। এ বিক্ষোভ সমাবেশে অবিলম্বে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানান নেতারা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিউ ইয়র্কের জাতিসংঘে আগমনের প্রতিবাদে পূর্বানুমতি নিয়ে বিএনপি নেতারা এ বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন বলে উল্লেখ করেন। বিক্ষোভ সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির অনেক নেতাকর্মিরাই দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্তির শপথে বলিয়ান হতে যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটির দাবি জানান।
বিএনপি নেতারা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছেন না। বাংলাদেশে আজ গণতন্ত্র অনুপস্থিত। বাংলাদেশ এখন দুর্নীতির মহাসাগরে নিমর্জ্জিত। যুবলীগ নেতাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রশাসন হানা দিলেই বেরিয়ে আসছে লুটপাটের শত শত কোটি টাকা। উন্নয়নের নামে হরিলুটের দেশে রাজনৈতিক জনপ্রিয়তায় ঈর্ষাম্বিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দ্দেশে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে কারান্তরীণ রাখা হয়েছে। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে এই সরকার।
বিক্ষোভ সমাবেশের নেতৃত্ব প্রদানে সহায়তাকারীদের নেতারা হলেন- বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা এম এ মালিক,যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক নেতা এবং কেন্দ্রীয় বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির চার নেতা যথাক্রমে আব্দুল লতিফ সম্রাট, জিল্লুর রহমান জিল্লু, গিয়াস আহমেদ ও মিজানুর রহমান ভূইয়া (মিল্টন), ফ্লোরিডা বিএনপির সভাপতি এমরামুল হক চাকলাদার, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ক্যালিফোর্নিয়া বিএনপির সভাপতি বদরুল আলম শিপলু, সাধারণ সম্পাদক ওহিদুর রহমান, ওয়াশিংটন বিএনপির সভাপতি হাফেজ খান সোহায়েল, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, ভার্জিনিয়া বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ জহির, সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ, মেরিল্যান্ড বিএনপির সভাপতি শাহীদ খান, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কাজল, জর্জিয়া বিএনপির সভাপতি নাহিদ খান, সাধারণ সম্পাদক মামুন শরিফ, নিউ ইংল্যান্ড বিএনপির সভাপতি বদরে আলম সাইফুল, সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার মনসুর, মিশিগান বিএনপির সভাপতি দেওয়ান আকমল চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমেদ, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির আহ্বায়ক মাওলানা অলি উল্যাহ আতিকুর রহমান, সদস্য সচিব সাঈদুর রহমান সাঈদ, নিউইয়র্ক মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, সদস্য সচিব মোহাম্মদ বদিউল আলম, নিউইয়র্ক মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আহবাব চৌধুরী খোকন, সদস্য সচিব ফয়েজ চৌধুরী, টেক্সাস বিএনপির সভাপতি সাইদুল হক সাইদ, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, পেনসিলভানিয়া বিএনপির সভাপতি শাহ ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক নূর উদ্দিন নাহিদ, ওহাইও বিএনপির সভাপতি হাসিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, শিকাগো বিএনপির সভাপতি শাহ মোজাম্মেল নান্টু এবং ডেইজি নার্গিস, কানেকটিকাট বিএনপির সভাপতি তৌফিকুল আম্বিয়া, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন হিমু, নিউজার্সি (উত্তর) সভাপতি সৈয়দ জুবায়ের আলী, সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু পাঠান, নিউজার্সি দক্ষিণের সভাপতি মোহাম্মদ কাওসার শাহীন এবং সাধারণ সম্পাদক রহিম বাবুল।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুল ইসলাম মজনু, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, পারভেজ সাজ্জাদ, সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুস সবুর, আনোয়ারুল ইসলাম, কাজী আজম, ফিরোজ আলম, ভিপি জহির মোল্লা, নাসিম আহমেদ, মোতাহার হোসেন, কামরুল হাসান, আল মামুন সবুজ, নুরে আলম, আলাউদ্দিন, নিউইয়র্ক ষ্টেট বিএনপি’র আহ্বায়ক ওয়ালিউল্লাহ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ও সদস্য সচিব সাইদুর রহমান সাঈদ, নিউইয়র্ক মহানগর (উত্তর) বিএনপি’র আহ্বায়ক আহবাব চৌধুরী খোকন ও সচিব ফয়েজ চৌধুরী, নিউইয়র্ক মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপি’র আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা ও সদস্য সচিব বদিউল আলম, কেন্দ্রীয় জাসাস নেতা গোলাম ফারুক শাহীন, যুবদল নেতা জাকির এইচ চৌধুরী, সাবেক সা সম্পাদক আবু সাঈদ আহমদ ও ইলিয়াস খান, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেক দলের নেতা মাকসুদুল হক চৌধুরী ও সাইফুর রহমান খান হারুন ও যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদল নেতা মাজহারুল ইসলাম জনি।
ফ্লোরিডা বিএনপি: সভাপতি ইমরানুল হক চাকলাদার, সাধারন সম্পাদক ইলিয়াস খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি রফিকুল হক, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শহিদ ফিরোজ খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক ও মোহাম্মদ মহসিন।
নিউ ইংল্যান্ড বিএনপি: সভাপতি সৈয়দ বদরে আলম সাইফুল, সাধারন সম্পাদক আলী হায়দার মনসুর, কাজী নুরুজামান, সোহরাব খান, আশরাফুল আলম টিপু, সাইফুল কাজল, মোশাররফ হোসেন সুমন ও রহিমুজ্জামান রাজা প্রমুখ।
আওয়ামীগের শান্তি সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মিরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।