মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিরসনে দ্বিরাষ্ট্র তথা স্বাধীন ফিলিস্তিন ও ইসরাইল রাষ্ট্রের বিষয়ে পুনরায় গুরুত্ব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মধ্যপ্রাচ্য সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সোমবার ইসরাইলে এ কথা বলেছেন। গত রোববার তিন দিনের সফরে প্রথমে মিশর যান তিনি। সেখান থেকে সোমবার তেলআবিবে পৌঁছেন। আজ মঙ্গলবার ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে তার বৈঠক করার কথা রয়েছে।
চলতি মাসে ইসরাইলে অতিডানপন্থি নতুন সরকার ক্ষমতাগ্রহণের পর ফিলিস্তিনের সঙ্গে উত্তেজনা বেড়েছে। জানুয়ারিতে ইসরাইলি বাহিনী ও বসতি স্থাপনকারী ইহুদিদের হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে গত শুক্রবার একটি সিনাগগে বন্দুকধারীর হামলায় সাত ইহুদি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে চরম উত্তেজনার মধ্যেই রোববার মধ্যপ্রাচ্য সফরে যান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরব নিউজ জানিয়েছে, সোমবার জেরুজালেম সফরকালে ব্লিঙ্কেন উভয়পক্ষকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দ্বিরাষ্ট্র সমাধানকে একমাত্র উপায় ধরে সামনে অগ্রসর হতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অন্যদিকে তেলআবিব পৌঁছে সাংবাদিকদের মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ওইসব লোকের নিন্দা করি, যারা নিরীহ মানুষের ওপর হামলা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। এ ক্ষেত্রে কে ভিকটিম কিংবা তার ধর্ম কী, সেটি কোনো বিষয় নয়।
খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইল পৌঁছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ব্লিঙ্কেন। তবে বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসূচি অনুযায়ী ধারণা করা হয়, চলমান সফরে তিনি ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকট, ইউক্রেন ইস্যু এবং ইরানের বিষয়ে আলোচনা করে থাকতে পারেন।
মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিক এমন সময় ইহুদি রাষ্ট্রটি সফরে গেলেন, যখন দুদিন আগে নেতানিয়াহু পূর্ব সতর্কতার অজুহাতে সাধারণ ইসরাইলিদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে আজ মঙ্গলবার পশ্চিমতীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বৈঠকের কথা রয়েছে। যেখানে চলমান উত্তেজনার পাশাপাশি ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে রোববার কায়রো পৌঁছে মিশরীয় প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসি এবং দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় ফিলিস্তিন ইস্যু, লিবিয়ার নির্বাচন এবং সুদান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে খবর দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
এ ছাড়া বৈঠকে মিশরের অথনৈতিক, রাজনৈতিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে কায়রোর নীতির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কথা জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।