বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবিতে পদযাত্রা করেছেন আইনজীবীরা। সরকারবিরোধী আইনজীবীদের নিয়ে নবগঠিত ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের (ইউএলএফ) উদ্যোগে রোববার এ পদযাত্রা হয়। দুপুর দেড়টার দিকে কয়েকশ আইনজীবীর অংশগ্রহণে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। এরপর মাজার গেট দিয়ে শিক্ষাভবন, কদম ফোয়ারা, জাতীয় ঈদগাহ ময়দান হয়ে সুপ্রিমকোর্টের প্রধান গেটের সামনে গিয়ে সমাবেশের মধ্যদিয়ে পদযাত্রা শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য আবেদন করার কথা বলে তামাশা করা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার কিছু হলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনে বিচার চাওয়া হবে।’
ইউএলএফের কেন্দ্রীয় কনভেনার জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিনের সভাপতিত্বে এবং সুপ্রিমকোর্ট ইউনিটের কো-কনভেনার মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় সমাবেশে মোর্চার কো-কনভেনার সুব্রত চৌধুরী, প্রধান সমন্বয়ক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সিনিয়র আইনজীবী মহসিন রশিদ, জগলুল হায়দার আফ্রিক, কেএম জাবির, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, সৈয়দ মামুন মাহবুব, মহসিন মিয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন। জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘এই সরকার গণতন্ত্র হত্যা করেছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হত্যা করেছে। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। শেখ হাসিনা বলেছেন, স্যাংশনের ভয় পান না। কিন্তু আমরা দেশের মানুষ লজ্জা পায়, অনেক হয়েছে। এইদিন দিন না, আরও দিন আছে। এইদিন নিয়ে যাবে আপনাদের পদত্যাগের কাছে।’
তিনি বলেন, ‘অক্টোবরের মধ্যে আপনাকে (শেখ হাসিনা) বিদায় নিতে হবে। আপনি যত তাড়াতাড়ি দেশে এসে পদত্যাগ করবেন ততই দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে।’
সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেই দেশে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে।’
মহসিন রশিদ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া না হলে জনগণকে নিয়ে আমরা তাকে মুক্ত করে আনব।’
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘খালেদা জিয়া এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। কিন্তু বিদেশে তার চিকিৎসার জন্য আবেদন করার কথা বলে তামাশা করা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার কিছু হলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনে আপনাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। আইনের শাসন কায়েম না হওয়া পর্যন্ত আইনজীবীরা ঘরে ফিরবেন না।’
এর আগে নিজ চেম্বারে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আবেদন অনেকে আগেই করা হয়েছে। তাই এ বিষয়ে নতুন করে আবেদন চাওয়া অমানবিক।’
কায়সার কামাল আরও বলেন, ‘১৯৯০ সালের ১৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে একটি ঘোষণা আছে। সেখানে বলা আছে, যদি কোনো সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে হয়, তখন সে দেশের সরকারের দায়িত্ব তাকে বিদেশে পাঠানো। সেই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্স নাভালিনকে জার্মানি পাঠানো হয়েছিল।’
এছাড়া বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫ এবং ৩২ অনুযায়ী খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।