২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০২:১৩:০২ অপরাহ্ন
রাজশাহীতে ১০ বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-১০-২০২৩
রাজশাহীতে ১০ বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড

রাজশাহীতে এক দিনের বৃষ্টিপাতে ১০ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। বুধবার বেলা ১টা থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ১টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৪৫ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।


বৃষ্টিতে শহরের রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। অনেক বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর নির্বাচনী পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। তবে এই দুর্ভোগের মধ্যে নগরের পাড়া-মহল্লায় লোকজন জাল নিয়ে মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠেছেন।


রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর এই মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ৪৩ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়। তার আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর ৩০ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল।


সূত্রমতে, গত এক দশকে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের ঘটনাগুলো হলো ২০২১ সালের ২১ জুলাই ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীতে ১১১ দশমিক ৬ মিলিমিটার, ২০১৭ সালের ১৩ জুলাই ২৪ ঘণ্টায় ১০৭ দশমিক মিলিমিটার, ২০১৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর ৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।


বৃহস্পতিবার বেলা একটা পর্যন্ত রাজশাহীতে একটানা বৃষ্টি হয়েছে। বেলা একটার দিকে কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টিতে নগরের রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। অনেক পুকুর ভেসে গেছে। নগরের টিকাপাড়া গোরস্থানের সামনের রাস্তায় হাঁটুপানি জমেছে। এ সড়কে এলাকাবাসী জাল নিয়ে মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠেছেন।


নগরের বোসপাড়া এলাকার অনেক ঘরবাড়িতে পানি উঠে গেছে। ওই এলাকার গৃহবধূ জুলেখা বেগম জানান, তাঁর বাড়িতে পানি উঠেছে। পানির সঙ্গে মাছও ভেসে এসেছে। তাঁর ছেলে বাড়িতে আধা কেজির মাগুর মাছ ধরেছে।


মহিষবাথান, বর্ণালী মোড় এলাকায় প্রধান সড়কটিতে হাঁটুসমান পানি জমেছে। বর্ণালী মোড় থেকে সাহেববাজারের দিকে নেমে যাওয়া রাস্তাটিতে আরও বেশি পানি জমেছে। বর্ণালী মোড় থেকে পূর্বে কাদিরগঞ্জ হয়ে দড়িখড়বোনা-রেলগেট সড়কেও একইভাবে পানি জমেছে।


নগরের উপশহর, ভদ্রাসহ মূল শহরের বাইরের এলাকাগুলোয়ও পানি জমে গেছে। এ এলাকায় একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষজন কম বেরোচ্ছেন। রাস্তাঘাটে যানবাহন কম। লক্ষ্মীপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ঘোষপাড়া মোড় পর্যন্ত হাসপাতালের সামনের রাস্তা ডুবে গেছে।


লক্ষ্মীপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফারুক হোসেন জানান, বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির আজ নির্বাচনী পরীক্ষা ছিল। অতি বৃষ্টিপাতের কারণে সেই পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।


রাজশাহীর পরিবেশবাদী সংগঠন হেরিটেজের প্রতিষ্ঠাতা নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, আজ সকালে তিনি রিকশা নিয়ে তিন ঘণ্টা শহরে ঘুরেছেন। তিনি ৪৫টি জায়গায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখেছেন। তার মধ্যে নগরের প্রাণকেন্দ্র সিঅ্যান্ডবি এলাকায় মানুষের ব্যাপক দুর্ভোগ দেখেছেন। এ এলাকায় ড্রেনগুলো উঁচু। রাস্তাগুলো নিচু। এ জন্য বেশি পানি জমেছে। এ শহরের অন্তত ১০০টি পয়েন্টে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।


তিনি আরও বলেন, ‘রাজশাহী নগরের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো। বড় ড্রেন আছে। আমাদের সৌভাগ্য শহরের উত্তর পাশ দিয়ে একটি নদী আছে। ড্রেনের পানি গিয়ে সেই নদীতে পড়ে। নিয়ম অনুযায়ী বছরে অন্তত চারবার এই ড্রেনগুলো পরিষ্কার করতে হবে। কারণ, এই ড্রেনের মধ্যেই পলিথিন, শক্ত বর্জ্য-সবই ফেলা হয়। এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ড্রেন উপচে পানি রাস্তায় চলে আসে।’


শেয়ার করুন