সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লিভারে জীবাণু ছড়িয়ে পড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে তার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। এজন্য তাকে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া দরকার; যেটি দেশে নেই। বিদেশে এর ব্যবস্থা আছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সবশেষ শারীরিক অবস্থা জানিয়ে মেডিকেল বোর্ড অনতিবিলম্বে তাকে বিদেশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা এ কথা জানান।
মেডিকেল বোর্ডের সমন্বয়ক ডা. এসএম সিদ্দিকী বলেন, এখন খালেদা জিয়ার যে অবস্থা, তাতে করে তাকে বাসায় নেওয়া যাবে না। এখানকার চিকিৎসকরা তাদের সাধ্য অনুযায়ী যা করার করেছেন। এখন তাকে বিদেশে নিতেই হবে। এতে তার জীবন রক্ষা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার এখন যে শারীরিক অবস্থা, তার লিভারে পানি জমেছে। সেই পানি ঝরছে। লিভারে জীবাণু আক্রান্ত হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে তাকে বাইরে নেওয়া দরকার।
প্রসঙ্গত, গত ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া।
৭৮ বছর বয়সি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
গত ৯ আগস্ট থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া। আজ তার হাসপাতালে ভর্তির দুমাস পূর্ণ হলো।
এর আগেও শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১০ জুন রাত পৌনে ৩টার দিকে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
গত বছরের ১০ জুন গভীর রাতে বুকে ব্যথা নিয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে ভর্তি হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। পরে দ্রুত এনজিওগ্রাম করে তার হার্টে একটি রিং বসানো হয়। হার্টের দুটি ব্লক এখনো রয়ে গেছে।
এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। গত বছরের ২২ আগস্টও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন। এক সপ্তাহ পর ২৮ আগস্ট ফের হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ভর্তি করানো হয়। দুদিন হাসপাতালে থাকার পর ৩১ আগস্ট বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কারাগারে গিয়েছিলেন। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে ‘সাময়িক মুক্তি’ দেয় সরকার। এর পর কয়েক দফা তার দণ্ডাদেশ স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়।