ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার কেন্দ্র ও উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়ার সময় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। হামাসের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর সকালে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা শুরু করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারা মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে ইসরায়েলের দিকে ৫ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। একই সঙ্গে স্থলপথ, জলপথ ও আকাশপথে দেশটিতে ঢুকে পড়েন হামাস যোদ্ধারা। ইসরায়েলও এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ ঘোষণা করে হামাসের বিরুদ্ধে। এর পর থেকেই দফায় দফায় গাজায় বিমান, স্থল এমনকি নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
বিগত ৭ দিনের প্রতিদিনই ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। পাশাপাশি বিগত কয়েক দিনে গাজার বেশ কয়েকটি স্থানে ছোট পরিসরে স্থল অভিযানও চালিয়েছে। ইসরায়েলের এসব অভিযানে প্রতিনিয়তই বেসামরিক ফিলিস্তিনি মারা যাচ্ছে।
হামাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। তাঁরা সবাই ইসরায়েলের হামলার ভয়ে উত্তর গাজা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে দক্ষিণে পালাচ্ছিলেন। হামাস এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করলেও দেশটি এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি।
এদিকে, হামাসের ঘাঁটি বলে পরিচিত গাজার কেন্দ্র অঞ্চল থেকে সাধারণ নাগরিকদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর গাজায় সরে যাওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে ইসরায়েল। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই আল্টিমেটাম শেষেই ইসরায়েল গাজায় স্থল অভিযান শুরু করতে পারে। এরই মধ্যে দেশটি গাজা সীমান্তে বিপুল পরিমাণ ট্যাংক ও বিপুল পরিমাণ সৈন্য জমায়েত করেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সব আলামত থেকে অনুমান করা যায়—এই সপ্তাহের শেষে অর্থাৎ আগামীকাল শনিবার থেকেই গাজায় স্থল অভিযান শুরু করতে পারে ইসরায়েল।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই সপ্তাহান্তে অর্থাৎ আজ শনিবারের মধ্যেই ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরু হয়ে যেতে পারে। কারণ, ইসরায়েল ঘোষিত ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষ হবে শনিবার সকালের দিকে, যেহেতু এই আল্টিমেটাম সামনে এসেছে ফিলিস্তিনের স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার সকালে।
অপরদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিগত ৭ দিন ধরে চলা যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে অন্তত ১৯০০ মানুষ। নিহতদের মধ্যে ৬১৪ জন শিশু ও ৩৭০ জন নারী। এ ছাড়া ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭ হাজার ৬৯৬ জন।