২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:১২:২৬ অপরাহ্ন
মেগা প্রকল্পে যোগাযোগে বিপ্লব
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-১০-২০২৩
মেগা প্রকল্পে যোগাযোগে বিপ্লব

উড়াল-পাতাল মেট্রোরেল, নদীর তলদেশে টানেল, ১৪ লেনের এক্সপ্রেসওয়ে, বাস চলাচলের পৃথক লেন বিআরটি ও ১৫০ সেতু উদ্বোধনের পর বদলে যাবে দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে এসব মেগা প্রকল্প। যোগাযোগ অবকাঠামোর বেশিরভাগ প্রকল্প এ বছরেই শেষ হচ্ছে।

আগামী ১৯ অক্টোবর সারাদেশের ১৫০ সেতু, ২৮ অক্টোবর কর্ণফুলীর নদীর তলদেশের টানেল ও ২৯ অক্টোবর মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বর্তমানে ২৪ হাজার কিলোমিটারের (কিমি) অধিক সড়ক ও ২১ হাজার সেতু-কালভার্টের মহাসড়ক নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া পূর্বাচলের ১৪ লেনের এক্সপ্রেসওয়ে ও গাজীপুর-বিমানবন্দর সড়কে বাস চলাচলের পৃথক লেন বাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) কাজও শেষ পর্যায়ে। পাশাপাশি সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত উড়াল-পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ শুরু হবে চলতি মাসেই। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সড়ক যোগাযোগ একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে। যা বর্তমান সরকারের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আরেকটি মাইলফলক বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

এ বিষয়ে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী জনকণ্ঠকে বলেন, ‘সারাদেশে সড়ক ও মহাসড়কের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনের জন্য আগামী ১৯ অক্টোবর ১৪০ সেতু ও ১২টি ওভারপাস উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া আগামী ২৯ অক্টোবর এমআরটি লাইন-৬ এর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ এবং ২৮ অক্টোবর সেতু বিভাগের কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে দেশের যোগাযোগ অবকাঠামোর বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে বলে জানান তিনি।

মেট্রোরেল ॥ আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল সার্ভিস আগামী ২৯ অক্টোবর চালু হবে। এই অংশটুকু চালু হলে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলে আসতে সময় লাগবে ৩৮ মিনিট। প্রথমদিকে শুধু আগারগাঁও-ফার্মগেট-মতিঝিল পর্যন্ত চলাচল করবে মেট্রোরেল। এই রুটে সাতটি স্টেশন পর্যায়ক্রমে চালু হবে। দেশের প্রথম মেট্রোরেল উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ দশমিক ২৬ কিমি দীর্ঘ ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত গত বছর ২৮ ডিসেম্বর  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশটি ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।

ঢাকা মহানগরী ও পার্শ¦বর্তী এলাকার যানজট নিরসনে এভাবে উড়াল ও পাতালপথের সমন্বয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে ছয়টি মেট্রোরেল। ১২৮ দশমিক ৭৪১ কিমি দীর্ঘ হবে পুরো রেলপথ। এর মধ্যে ৬৭ দশমিক ৫৬৯ কিমি হবে উড়াল পথে এবং ৬১ দশমিক ১৭২ কিমি হবে মাটির নিচ দিয়ে। ২০৩০ সালের মধ্যে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

এর মধ্যে দ্বিতীয় মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-১। ৩১ দশমিক ২৪ কিমি দীর্ঘ এই রেলপথটি নির্মাণ করা হবে দুটি রুটে। এর মধ্যে উত্তরা বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৮৭ কিমি হবে মাটির নিচ দিয়ে (পাতাল)। এ ছাড়া গুলশানের নতুন বাজার থেকে পূর্বাচলের পিতলগঞ্জ পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিমি হবে উড়ালপথে (এলিভেটেড)। গত ২ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরে দেশের প্রথম এই পাতাল মেট্রোরেলের ডিপো নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তৃতীয় মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৫ নর্দার্ন রুট। ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত উড়াল ও পাতালপথের সমন্বয়ে এটি হবে ২০ কিমি দীর্ঘ। চলতি মাসেই এই মেট্রোরেল নির্মাণ শুরু হবে। চতুর্থ মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৫ সাউদার্ন (দক্ষিণ) নির্মাণ হবে গাবতলী থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত। পঞ্চম মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-২ রুট। উড়াল ও পাতালপথের সমন্বয়ে গাবতলী থেকে কাঁচপুর সেতু হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পর্যন্ত ২৪ কিমি দীর্ঘ হবে এই রেলপথ। ষষ্ঠ মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৪ উড়ালপথে নির্মাণ করা হবে। রাজধানীর কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত ১৬ কিমি দীর্ঘ হবে রেলপথটি।

কর্ণফুলী টানেল ॥ চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর ১৮-৩১ মিটার গভীর তলদেশে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের প্রথম ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ২৮ অক্টোবর যানবাহন চলাচলের জন্য টানেলটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানেল উদ্বোধন ঘিরে চলছে নানা প্রস্তুতি। তৈরি করা হচ্ছে উদ্বোধনী নামফলক। নানাভাবে টানেলের দুই প্রান্তকে সাজানো হচ্ছে। দেশের প্রথম এ সুড়ঙ্গপথ নির্মাণ করেছে চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি) লিমিটেড। চীনের অর্থায়নে জিটুজি ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ জনকণ্ঠকে বলেন, যানবাহন চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত মূল টানেল। আগামী ২৮ অক্টোবর এটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে। এখন টানেলের ভেতরে-বাইরে নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। টানেলের সুরক্ষার জন্য দুই পাশে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ফাঁড়ির ভবন নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ চলছে। টানেল প্রকল্পের অগ্রগতি ৯৬ শতাংশ। ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো কাজ শেষ হবে। তবে টানেল নির্মাণ শতভাগ শেষ হয়েছে। টানেলে নিরাপত্তায় ১০০টির বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। টানেলে চলাচলকারী গাড়ির গতিবেগ প্রথম দিকে ঘণ্টায় ৬০ কিমির বেশি হবে না। হেঁটে টানেল পার হওয়া যাবে না।


 


একইভাবে মোটরসাইকেল এবং তিন চাকার যানবাহনও চলাচল করবে না টানেল দিয়ে। নির্ধারিত ওজনের বেশি ভারি যানবাহন এ টানেল দিয়ে চলতে দেওয়া হবে না। এ জন্য টানেলের প্রবেশমুখে নির্মাণ করা হয়েছে ওজন স্কেল।

প্রকল্প সূত্র জানায়, চীনের সাংহাই শহরের আদলে ওয়ান সিটি টু টাউন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের এই টানেলটি নির্মাণ করা হয়েছে। টানেলের এক প্রান্তে চট্টগ্রাম শহর, অপর প্রান্তে রয়েছে আনোয়ারা উপজেলা। মূল টানেলের দৈর্ঘ্য তিন দশমিক ৩২ কিমি। চার লেনবিশিষ্ট দুটি টিউবের প্রতিটির দৈর্ঘ্য দুই দশমিক ৪৫ কিমি। মূল টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে পাঁচ দশমিক ৩৫ কিমি সংযোগ সড়ক এবং আনোয়ারা প্রান্তে ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৪২ কোটি টাকা।


এর মধ্যে পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা দিয়েছে চীন সরকার। বাকি টাকা ব্যয় করেছে বাংলাদেশ সরকার। ২০১৫ সালের নভেম্বরে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দেড়শ’ সেতু ॥ সারাদেশের সড়ক-মহাসড়কে নির্বিঘেœ যানবাহন চলাচলের জন্য নির্মাণ হচ্ছে বিভিন্ন যোগাযোগ অবকাঠামো। এর অংশ হিসেবে আগামী ১৯ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসে রাজধানীর তেজগাঁও সড়ক ভবনে সারাদেশের ১৪০টি সেতু ও ১৪টি ওভারপাস এবং ভেহিক্যাল ইন্সপেকশন সেন্টার (ভিআইসি) উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব সেতু ও ওভারপাস দেশের আটটি বিভাগের ৩৭ জেলায় নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৬টি সেতু, ঢাকা বিভাগে ২৯ সেতু, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৬ সেতু, রাজশাহী বিভাগে ২২ সেতু ও আটটি ওভারপাস, খুলনা বিভাগে ১০টি সেতু, বরিশাল বিভাগে আটটি সেতু, রংপুর বিভাগে আটটি সেতু ও ছয়টি ওভারপাস এবং সিলেট বিভাগে একটি সেতু উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) কর্মকর্তারা জানান। এ ছাড়া ওইদিন সারাদেশের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা এবং দুর্ঘটনায় অঙ্গহানি হয়েছেন তাদের প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। 



বিআরটি-৩ ॥ চলতি বছরের শেষের দিকে চালু হচ্ছে গাজীপুর-বিমানবন্দর সড়কের বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পটি। এ পর্যন্ত পুরো প্রকল্পের ৯১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। গাজীপুরের শিববাড়ি থেকে উত্তরা বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ দশমিক ৫ কিমি দীর্ঘ বিআরটি (বাস চলাচলের পৃথক লেন) সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। পুরো লাইনে ২৫টি বিআরটি স্টেশন থাকবে এবং এ লাইনের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় চার লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট (বিআরটি, গাজীপুর-বিমানবন্দর) অনুমোদন করে সরকার। এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুর পর্যন্ত করিডরের ছয়টি ইন্টারসেকশনে গ্রেড সেপারেশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং এজন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধায়নে ছয়টি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে। এয়ারপোর্ট ইন্টারসেকশনে উত্তর ও দক্ষিণগামী যানবাহনের চলাচল নির্বিঘœ করতে রাস্তার উভয় পাশে দুটি পৃথক ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে। এই অংশে বিআরটি স্টেশনটি দুটি ফ্লাইওভারের মধ্যবর্তী স্থানে নির্মিত হবে এবং বিআরটি বাসের জন্য ইউটার্নের ব্যবস্থা থাকবে।

পথচারীদের রাস্তা পারাপার নিরাপদ এবং নির্বিঘœ করতে এ প্রকল্পের আওতায় হাজী ক্যাম্প থেকে বিমানবন্দর টার্মিনাল পর্যন্ত ৬২০ মিটার দীর্ঘ একটি প্রশস্ত পথচারী-পারাপার আন্ডারপাস নির্মাণ করা হবে এবং বিআরটি ও এমআরটি লাইন-১ এর স্টেশনসহ সাতটি প্রবেশপথ থাকবে। গাজীপুর থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত বিস্তৃত করিডরে উভয়মুখী বিআরটি বাস চলাচলের জন্য রাস্তার মাঝখানের অংশে দুটি ডেডিকেটেড বিআরটি লেন থাকবে। এই প্রকল্পে বিআরটি করিডর নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে উভয় পাশের সাধারণ রাস্তার লেন, ধীরগতি যানবাহন চলাচলের পৃথক লেন ও পথচারী চলাচলের ফুটপাথের উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণের কাজ চলছে।

প্রকল্পের আওতায় ৬ লেনের জসিমউদ্দিন ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে দুটি লেন বিআরটির জন্য নির্ধারিত। জসিমউদ্দিন সড়কের ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে ইউটার্ন নেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। বিআরটির প্রতিটি স্টেশনে প্রবেশ করতে এবং বের হতে ফুটওভার ব্রিজ, স্বয়ংক্রিয় চলমান সিঁড়ি, লিফট ও সাধারণ সিঁড়ির ব্যবস্থা থাকবে। উত্তরা হাউসবিল্ডিং থেকে চেরাগ আলী পর্যন্ত ৪ দশমিক ৫ কিমি অংশটি হবে এলিভেটেড (উড়াল) এই সড়কের দুটি বিআরটি লেন ও চারটি সাধারণ লেন থাকবে। এই ফ্লাইওভারটির ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এটি নির্মাণ করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। গত ঈদুল আজহার আগেই ফ্লাইওভারটি খুলে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বিআরটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, ‘প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি অনেক ভালো। চলতি বছরের শেষদিকে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। তবে বর্ষার কারণে বিভিন্ন স্থানে সড়কের কার্পেটিংয়ে একটু সমস্যা হচ্ছে। আশা করছি বৃষ্টি শেষ হলে কার্পেটিং শুরু করা হবে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিকভাবে ৯১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।’

পূর্বাচলে ১৪ লেনের এক্সপ্রেসওয়ে ॥ রাজধানীর সঙ্গে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সংযোগ করতে পূর্বাচলে নির্মাণ করা হচ্ছে সাড়ে ১২ কিমি দীর্ঘ ১৪ লেনের এক্সপ্রেসওয়ে (বিরতিহীন সড়ক)। এটি হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় এক্সপ্রেসওয়ে। রাজধানীর প্রগতি সরণি ও বিমানবন্দর সড়কের সঙ্গে পূর্বের ইস্টার্ন বাইপাসকে সংযুক্ত করবে এই সড়কটি। সাড়ে ১২ কিমি সড়কের মধ্যে রাজধানীর কুড়িল হতে বালু নদী পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিমি সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে ১৪ লেনবিশিষ্ট। এর মধ্যে আট লেন সড়ক হবে এক্সপ্রেসওয়ে। বাকি ছয় লেন সড়ক হবে স্থানীয় যানবাহন চলাচলের জন্য সার্ভিসরোড।


এছাড়া বালু নদী থেকে কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত ছয় কিমি সড়ক হবে ১২ লেনের। এর মধ্যে ছয় লেন সড়ক হবে এক্সপ্রেসওয়ে। বাকি ছয় লেন হবে সার্ভিস রোড। এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ‘কুড়িল-পূর্বাচল লিঙ্ক রোডের উভয় পাশে ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এটি বাস্তবায়ন করছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। 

নির্র্মাণ কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। চলতি বছরের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষে হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক এমএম এহসান জামিল জনকণ্ঠকে বলেন, ‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৩০০ ফুট সড়কটি এক্সপ্রেসওয়ে করা হচ্ছে। এ ছাড়া ১০০ ফুট খাল খনন, ১৩টি আর্চ ব্রিজ, পাঁচটি অ্যাটগ্রেড ইন্টারসেকশন, বিদ্যমান ছয়টি ব্রিজ প্রশস্ত করা, কুড়িল থেকে বালু নদী পর্যন্ত ১৪ লেন সড়ক উন্নয়ন, বালু নদী থেকে কাঞ্চন পর্যন্ত ১২ লেন উন্নয়ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি এডি-৮ খাল, বোয়ালিয়া খাল ও ডুমনি খাল উন্নয়ন হচ্ছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাউন্ডারি ওয়াল, ইউড্রেন নির্মাণ, জিআরপি পাইপ লাইন স্থাপন ও নিকুঞ্জ লেক উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েছে।’ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।


শেয়ার করুন