ইরানের কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনিকে মরণোত্তর মানবাধিকার পুরস্কারে ভূষিত করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশের হেফাজতে মারা যান তিনি। মাহসার মৃত্যুর কারণে ইরানে শুরু হওয়া ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ আন্দোলনও যৌথভাবে এই সর্বোচ্চ মানবাধিকার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলা গত বৃহস্পতিবার এই পুরস্কার ঘোষণা করেন।
শাখারভ নামে পরিচিত এই পুরস্কারের অর্থমূল্য ৫০ হাজার ইউরো। আগামী ডিসেম্বরে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এক অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার দেওয়া হবে। গতকাল শুক্রবার বিবিসি ও আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানের নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশ মাহসা আমিনিকে আটক করেছিল। ইরানের কঠোর ইসলামি পোশাকবিধি অমান্য করার অভিযোগ করা হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। আটকের পরে ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি পুলিশি হেফাজতে মারা যান।
পরিবার ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সঠিক নিয়মে হিজাব না পরায় ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশের সাকেজ শহরে কুর্দি বংশোদ্ভূত নারী মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে দেশটির নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশ। গ্রেপ্তার অবস্থায় মাহসা আমিনিকে মারধর করা হয়েছিল। পরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশের হেফাজতে মারা যান তিনি।
মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে ইরানে কয়েক হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিক বিক্ষোভের মুখে দেশটির নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশের কার্যক্রম শিথিল করে ইরান সরকার। মানবাধিকারকর্মীদের অনুমান, কয়েক মাস ধরে চলা এই বিক্ষোভে ৪০০ জনেরও বেশি নিহত এবং ১৮ হাজার জনকে আটক করা হয়েছে।
মাহসার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানজুড়ে বিক্ষোভে ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে দেশটির শাসকগোষ্ঠী। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইরানি নারীদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানায়। ফলে ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ শীর্ষক আন্দোলন বৈশ্বিক রূপ নেয়।