ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নির্দয়ভাবে দমন করতে আন্তর্জাতিক সামরিক জোট ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। ইসরায়েল সফরে গিয়ে গতকাল মঙ্গলবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট প্রস্তাব করেন, ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটস নামে উগ্রবাদী গোষ্ঠী দমনে যে আন্তর্জাতিক সামরিক জোট কাজ করছে, তাদের হামাসকে দমনেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েল সফরে যান ফরাসি প্রেসিডেন্ট। সেখানে তিনি ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ ও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট আন্তর্জাতিক সামরিক জোট ব্যবহারের প্রস্তাব দেন।
সন্ত্রাসবাদকে ইসরায়েল ও ফ্রান্সের সাধারণ শত্রু আখ্যা দিয়ে ইসলামিক স্টেটসকে ইঙ্গিত করে মাখোঁ বলেন, ‘ফ্রান্স দায়েশের (ইসলামিক স্টেটসের আরেক নাম) বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জোটের অংশ হিসেবে ইরাক ও সিরিয়ায় লড়াই করছে। আমরা এই জোটের অংশ হিসেবে হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্যও প্রস্তুত।’
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এ সময় হামাস-ইসরায়েলের সংকট মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আঞ্চলিক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ‘তাই হামাসকে নির্দয়ভাবে আইনের মধ্যে থেকেই দমন করতে হবে।’ তবে হামাসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সামরিক জোটকে কীভাবে ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে কোনো রূপরেখা দেননি। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেননি।
এদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘হামাসের হামলাগুলো বিনা কারণে ঘটেনি।’ তিনি বলেছেন, ৫৬ বছর ধরে ফিলিস্তিনিরা একটি শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। ফিলিস্তিনিদের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে গুতেরেস বলেন, ‘তাদের ভূমিকে নিরবচ্ছিন্নভাবে বসতি দ্বারা গ্রাস করা হচ্ছে এবং সহিংসতায় জর্জরিত তারা, তাদের অর্থনীতি স্তব্ধ, মানুষ বাস্তুচ্যুত এবং তাদের বাড়িঘর ধ্বংস করা হচ্ছে। তাদের দুর্দশার রাজনৈতিক সমাধানের আশাও লোপ পেয়েছে।’
গাজায় বর্তমানে যে পরিমাণে সাহায্য পাঠানো হচ্ছে, তাকে ‘প্রয়োজনের সমুদ্রে এক বিন্দু জল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন গুতেরেস। তিনি বলেন, ‘আমি আবারও বলছি, গাজায় খুব দ্রুত যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়া হোক।’ গুতেরেস জানান, গাজায় আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের যে স্পষ্ট লঙ্ঘন হচ্ছে, সে বিষয়ে তিনি গভীরভাবে অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষের প্রতিই আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা ও মানবিক হওয়ার আহ্বান জানান।