২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৩:০৬:৪৮ অপরাহ্ন
অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক দল মাঠে তৎপর, সারাদেশ নির্বাচনমুখী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-১১-২০২৩
অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক দল মাঠে তৎপর, সারাদেশ নির্বাচনমুখী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশ নির্বাচনমুখী হয়ে পড়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ছোট বড় অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক দল মাঠে তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। ৩০০ আসনে দলীয় মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু করেছে আওয়ামী লীগসহ বেশ কটি দল। এছাড়া স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে ইচ্ছুক প্রার্থীরাও নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগ শুরু করে দিয়েছে। 

এদিকে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করলেও নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়নি। তবে তলে তলে তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মহলের শেষ চেষ্টায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা কিংবা অন্য কোনোভাবে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ অনুকূল মনে করলে বিএনপি তাদের সমমনা দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে। সে ক্ষেত্রে তারা ৭ জানুয়ারির পরিবর্তে নির্বাচনের সময় আরেকটু বাড়িয়ে পুনরায় তফসিলের দাবি জানাবে। আর সকল দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দিলেও আইনগত কোনো সমস্যা হবে না বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। 

নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগসহ বেশ কটি দল স্বাগত জানায়। পরে প্রার্থী নির্বাচনসহ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করে। তবে বিএনপি তফসিল প্রত্যাখ্যান করলেও এ দলের দুই কেন্দ্রীয় নেতা সংবাদ সম্মেলন করে তারাসহ দলটির ১২৫ জন নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে ঘোষণা দেয়। তৃণমূল বিএনপিও সংবাদ সম্মেলন করে তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দেয়। এ দলটির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার বিএনপির এক সময়ের প্রভাবশালী নেতা। এ ছাড়া দলটির নির্বাহী চেয়ারম্যান অন্তরা হুদা প্রয়াত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। তাই বিএনপি নির্বাচনে না এলে এ দলের অনেক নেতা তৃণমূল বিএনপি থেকে সংসদ নির্বাচন করবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। 


আগের ৩টি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোটের অধীন নির্বাচন করা জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পক্ষে অবস্থান করলেও এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। তবে দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ বিবৃতি দিয়ে তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা জানিয়েছেন বর্তমানে দলীয় জাতীয় সংসদের ২৬ সদস্যের মধ্যে ২১ জন রওশন এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেবেন। এ পরিস্থিতিতে শীঘ্রই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন বলে সূত্র জানায়।


এছাড়া রাশেদ খান মেননের ওয়ার্কার্স পার্টি, হাসানুল হক ইনুর জাসদ, কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও দিলীপ বড়ুয়ার সাম্যবাদী দলসহ বেশ কটি দল নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে মাঠের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছে। কেউ কেউ উপজেলা চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন স্থানীয় সরকারের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। 

ভোটগ্রহণের জন্য আগেই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয়সহ মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। এখন শুধু ব্যালট পেপার ছাপার কাজ সরকারি মুদ্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন আছে। ফর্মেট প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর ব্যালট পেপার ছাপার কাজ শেষ করা হবে। আগেই আঞ্চলিক, জেলা, উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসের নিরাপত্তা চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ইসি। অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য স্মার্ট অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এখন ঘরে বসেই নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহী প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। 

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ছয় কোটি সাত লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন। আর নারী পাঁচ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার হচ্ছে ৮৫২ জন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের জন্য আলাদা আলাদা ভোটার তালিকা প্রস্তুত করেছে ইসি। এই তালিকা অনুযায়ী প্রতিটি সংসদীয় আসনের ভোটগ্রহণ করা হবে। 

এবার ৩০০টি সংসদীয় আসনে ভোটকেন্দ্র থাকছে ৪২ হাজার ৩৮০টি। আর ভোটকক্ষ থাকছে দুই লাখ ৬১ হাজার ৬৬৮টি। প্রতিটি ভোটকক্ষের জন্য একটি করে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স রাখা হবে। এছাড়া প্রতি কেন্দ্রে একটি করে অতিরিক্ত ব্যালট বাক্স দেওয়া হবে। সে হিসেবে সংসদ নির্বাচনে তিন লাখের বেশি স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স প্রয়োজন হবে। ভোটগ্রহণের জন্য এবার দশ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ৩০০ আসনে নির্বাচনের জন্য ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার এবং ৫৯২ জন সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

তফসিল ঘোষণা হয়ে গেলেও সকল দলের অংশগ্রহণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে করার জন্য দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মহলের নানামুখী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তবে পরস্পরবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বিপরীত মেরুতে অবস্থান করায় সমঝোতা হবে কিনা তা দেখার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে কোনোভাবে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা করা গেলে সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন করতে ঘোষিত তফসিল কোনো সমস্যা হবে না বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। তাদের মতে, ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমে ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচন করার জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে নির্বাচনের তারিখ আরও ১১ দিন পিছিয়ে ২৯ ডিসেম্বর করতে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করা হয়। 

ক্ষমতাসীন সরকারও দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মহলকে আশ্বস্ত করছেন সংবিধান অনুসারে বিদ্যমান ব্যবস্থায়ই দেশে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনও সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে সংবিধান অনুসারে তারা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি নিয়েছে। কমিশনের পক্ষ থেকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা করণীয় সব করা হচ্ছে। তফসিল ঘোষণার সময়ও সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিয়ে এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন। 

এদিকে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ডিসি-এসপি ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রতি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে ইতোমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে ইসি। নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করতে এবং একটি ভাল নির্বাচন উপহার দিতে সবাইকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে গ্রহণযোগ্য হবে। 

এদিকে তফসিল ঘোষণার পর জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থীর যোগ্যতাসহ বিস্তারিত পরিপত্র জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থীকে দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সম পদাধিকারীর সইযুক্ত প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। এছাড়া স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক সইযুক্ত তালিকা। তবে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী আগের কোনো সংসদ নির্বাচনে জয়ী হলে তাকে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক তালিকা জমা দিতে হবে না।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের জামানত হিসেবে জমা দিতে ২০ হাজার টাকা। ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে হলফনামা জমা দিতে হবে, যেখানে থাকবে আটটি সুনির্দিষ্ট তথ্য। এ ছাড়া আয়ের উৎস, দায়-দেনা, সম্পদ বিবরণী ও আয়কর রিটার্নের কাগজপত্র জমা দিতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে রিটার্ন দাখিলের কাগজপত্র জমা দেওয়ার পাশাপাশি তার অনুলিপি ইসিকেও দিতে হবে। এ নির্বাচনে প্রার্থীর ব্যয়সীমা হলো ২৫ লাখ টাকা। প্রার্থী বা তার এজেন্টকে একটি তফসিলি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এ ব্যয় করতে হবে।

সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের নাগরিক ও ২৫ বছর বয়স হলে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য হবেন। প্রার্থীকে বাংলাদেশের যে কোনো নির্বাচনী এলাকায় ভোটার হতে হবে।

তবে আদালতে অপ্রকৃতিস্থ ও দেউলিয়া হলে, অন্য রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন বা আনুগত্য স্বীকার করলে, নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দুই বছর বা তার বেশি কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে প্রার্থী নির্বাচনের অযোগ্য হবেন। এছাড়াও ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীন কোনো অপরাধের জন্য দ-িত হলে, প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত হলে অথবা অন্য কোনো আইনে নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হলে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তবে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রীর ক্ষেত্রে লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত বলে গণ্য হবে না। দ্বৈত নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে বিদেশী নাগরিকত্ব ত্যাগ করে এলে নির্বাচনে অযোগ্য হবেন না।

ক্ষুদ্র কৃষিঋণ ছাড়া ঋণগ্রহীতা হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনের আগে ঋণ বা তার কোনো কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে এবং টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি বা সরকারের সেবা প্রদানকারী কোনো সংস্থার অন্য কোনো বিল মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনের আগে পরিশোধে ব্যর্থ হলে নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। দি ইন্টারনাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট, ১৯৭৩ (অ্যাক্ট নম্বর. ১৯ অব ১৯৭৩)-এর অধীন কোনো অপরাধে অপরাধী সাব্যস্ত হলেও নির্বাচন করা যাবে না।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমার ক্ষেত্রে নির্ধারিত ফরমে প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী স্বাক্ষরিত মনোনয়ন প্রস্তাব মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করতে হবে। মনোনয়নে সম্মতি প্রদান করেছেন এবং তার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার বা সদস্য থাকার কোনো অযোগ্যতা নেই মর্মে ঘোষণা দিতে হবে। একজন প্রার্থী তিনটির বেশি নির্বাচনী এলাকার জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি বলে ঘোষণা দিতে হবে। অতীতে তার বিরুদ্ধে করা কোনো ফৌজদারি মামলা থাকলে তার রায়, ব্যবসা বা পেশার বিবরণী দিতে হবে।


আয়ের উৎসগুলো, নিজের বা নির্ভরশীলদের পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী, অতীতে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হলে ভোটারদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি কতগুলো পূরণ হয়েছে তার তথ্য, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে একক বা যৌথভাবে বা নির্ভরশীলদের নামে ঋণ থাকলে তার তথ্য, রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। এবার অ্যাপসের মাধ্যমে ঘরে বসে অনলাইনেও মনোনয়ন পত্র দাখিল করা যাবে। 

রাজপথের বিরোধী বিএনপিকে নির্বাচনে আনার শেষ চেষ্টা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে চিঠি দিয়ে শর্তহীন সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। 

তার পক্ষ থেকে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তিন দলের কাছে চিঠি পৌঁছে দিয়ে তাদের সংলাপে বসানোর জন্য দৌড়ঝাঁপ করে এখন পর্যন্ত সুখবর দিতে পারেননি। এদিকে বিএনপি তফসিলের দিন হরতাল ঘোষণা না করলেও একদিন পর ঘোষণা দিয়েছে রবিবার সকাল ছয়টা থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টা হরতাল পালনের। তবে এটি সরকারকে চাপে রেখে নির্বাচনের আগে সমঝোতার কৌশল বলে কেউ কেউ মনে করছেন। 

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের চাপে পড়ে বিএনপি এখন সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সংলাপের পক্ষে ইতিবাচক হলেও ইসি এ দলটিকে সংলাপের জন্য তিনবার আমন্ত্রণ জানালেও একবারও যায়নি। বরং এমন একটি ভাব করেছে যেন, বিএনপি সংলাপে না গেলে নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচনের দিকে যেতে পারবে না। নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি শেষবারের মতো ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সংলাপের আয়োজন করে। তবে এই সংলাপে আওয়ামী লীগসহ ২৬টি দল অংশ নিলেও বিএনপিসহ ১৮টি দল যায়নি। সংলাপের পর আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টিসহ কটি বাম দল, তৃণমূল বিএনপি এবং বেশ কটি ইসলামী দলসহ দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মাঠে সক্রিয় রয়েছে। দিনদিনই তারা প্রস্তুতি জোরদার করছে। ইতোমধ্যেই সংসদীয় আসনগুলোতে তাদের প্রচার কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগসহ কটি দলের ইশতেহার প্রণয়নের কাজও শেষ করে ফেলছে। 

বর্তমানে দেশে শতাধিক রাজনৈতিক দল রয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে আওয়ামী লীগসহ অর্ধশতাধিক দল নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় রয়েছে। আর বিএনপিসহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে শেষ ধাপের আন্দোলনে রয়েছে। তবে এই দলগুলো প্রকাশ্যে নির্বাচনে যাবে না বললেও নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছে তলে তলে।


শেয়ার করুন