আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস (মে দিবস) উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে র্যালি ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন। সোমবার সকাল ১০ টায় ফেডারেশনের সভাপতি এমকে বাঙ্গালী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে একটি র্যালি বের হয়। র্যালি শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিড়ি শ্রমিকদের মুজুরি বৃদ্ধি, বিড়ি কারখানাগুলোতে সপ্তাহে ৬ দিন কাজের ব্যবস্থা, আগামী ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটে বিড়ির শুল্ক ১৮ টাকা থেকে ২ টাকা কমিয়ে ১৬ টাকা করা এবং বিড়ির উপর অর্পিত অগ্রিম ১০ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তখনই স্বাধীনতা বিপক্ষের শক্তি বর্তমান সরকার তথা দেশের উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্থ করার লক্ষ্যে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। এছাড়া মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিরোধীতা করে আমেরিকা-ব্রিটিশ সপ্তম নৌ-বহর পাঠিয়েছিলেন। আবার সেই ব্রিটিশ-আমেরিকাসহ কিছু কিছু দেশ শেখ হাসিনার সরকারকে নির্বাচনের আগেই পতন করতে চায় এবং হুঁমকি-ধুমকি দিয়ে চলেছে। আমরা বিড়ি শ্রমিককেরা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর আহবানে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছি, দেশকে পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করেছি।
এছাড়া, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানীর দালালেরা বিড়ি শিল্পের শুল্ক বৃদ্ধির জন্য ষড়যন্ত্র করে চলেছে, তাদেরকে হুঁশিয়ার সাবধান করে দিতে চাই। এরই সাথে শোনা যাচ্ছে যে, কতিপয় সংসদ সদস্য ও দু-একজন সাবেক মন্ত্রীও এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত আছেন। আমরা অনুরোধ করছি আপনারা ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানীর ফাঁদে পা দিবেন না। ওরা আমাদের শত্রু, দেশের শত্রু, সরকারের শত্রু। ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানীর সিগারেটে এদেশের মানুষের ফুসফুস পুড়িয়ে বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে আসছে।’
বক্তারা আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অতিতেও বিড়ি শ্রমিক তথা শ্রমজীবী মানুষের সাথে ছিলেন, বর্তমানে আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন। তাইতো প্রধানমন্ত্রী মহান জাতীয় সংসদের এক বাজেট বক্তৃতায় বলেছিলেন, “বিড়ি আমাদের, সাধারণত আমাদের গরিব মানুষ ব্যবহার করে। মাননীয় স্পিকার, এই বিড়ি বানাতে আমাদের গরিব মানুষ, মহিলা শ্রমিক ও সাধারণ শ্রমিক একটা শ্রমের সুযোগ পায়, তারা কাজ পায়। এখানে (বিড়ির উপর) কমিয়ে, মূসক বৃদ্ধির প্রস্তাব বাদ দিয়ে বরং সিগারেটের উপর একটু বেশি কর বাড়িয়ে দিতে হবে...।”
বিড়ি শ্রমিককেরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে অতীতেও ছিলাম, বর্তমানেও আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো। তাই বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমাদের একটাই দাবি, “আমাদের তথা শ্রমিকজীবী বিড়ি শ্রমিকদের রক্ষার্থে বিড়ি শিল্প হতে ১৮ টাকা থেকে ২ টাকা কমিয়ে ১৬ টাকা শুল্ক নির্ধারণ করে দিন”। শ্রমজীবি মানুষের অধিকার আদায়ের দিনে আপনি আমাদের দাবি মেনে নিলে মহান মে দিবসের চেতনা সকলের মাঝে উদ্বুদ্ধ হবে।
বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক হারিক হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সহ-সভাপতি নাজিম উদ্দিন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, প্রচার সম্পাদক শামীম ইসলাম, কার্যকরী সদস্য আনোয়ার হোসেন, লুৎফর রহমান প্রমূখ।